শেয়ারবাজারে কারসাজি-গুজবের অভিযোগে গ্রেফতার ৩

শুক্রবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন- (১) মো. আমির হোসাইন ওরফে নুরনুরানী (৩৭), (২)নুরুল হক হারুন (৫২), এবং (৩)আব্দুল কাইয়ুম (৩৯)।এসব ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ডিবি প্রধান। তিনি বলেন, যারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উসকানি দিয়ে শেয়ারবাজার অস্থিতিশীল করে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

তারা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনের নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে রাস্তা দখল করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বলে জানা গেছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো বিভিন্ন বিষয়ে সাবস্ক্রিপশন আহ্বান করে। যদি তারা অর্থ প্রদান না করে, তারা অনলাইনে সেই সংস্থাগুলি সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়াতে শুরু করে। এমনকি কোম্পানির অফিসেও হামলা চালানো হয়।

এ ছাড়া গ্রেফতারকৃত আসামিরা শেয়ারবাজারে বিভিন্ন শেয়ার সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে দাম বাড়িয়ে বেশি দামে বিক্রি করে এবং এটি করার জন্য গোপনীয় হোয়াটসঅ্যাপ/টেলিগ্রাম গ্রুপ ব্যবহার করে। এই গ্রুপের সদস্যদের গ্রুপে যোগদানের জন্য একটি নির্দিষ্ট ফি দিতে হবে। শেয়ারে লাভ থাকলে লভ্যাংশ দিতে হয়। কিন্তু ক্ষতির দায় তারা নেয় না।

ডিবি প্রধান বলেন, শেয়ারবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা। দেশের অর্থনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সমস্ত সম্পদ এনে বিনিয়োগ করে। এখানে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক। একটি স্বার্থান্বেষী মহল দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, কমিশনের চেয়ারম্যানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপন গ্রুপ খুলে শেয়ারবাজার ও দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এবং বিভিন্ন মিথ্যা, ভুয়া ও প্রতারণামূলক তথ্য প্রদান করে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিজেদের স্বার্থে প্রতারিত করে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে। এ বিষয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন রমনা মডেল থানায় একটি মামলা করে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ মামলাটি তদন্ত করে মামলার ৩ আসামিকে গ্রেফতার করে।

তথ্যমতে, গ্রেফতারকৃত আসামি আমির হুসেন (যিনি ওরফে নূর নুরানী নামে পরিচিত) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দমন আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১১টি মামলা রয়েছে। নুরুল হক হারুন, বিনিয়োগকারী ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন সদস্য মিলে কোম্পানিগুলোকে চাঁদা দেন।

উল্লেখ্য, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার ও বিশেষ অপরাধ বিভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত মনিটরিং ও সাইবার টহল চালানো হচ্ছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উসকানি দিয়ে কেউ যাতে মুনাফা করতে না পারে সেজন্য শেয়ারবাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।

আওলাদ/