শেয়ারবাজারের উন্নয়নে চার বছরে দেড় শতাধিক সংস্কার

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে চার বছরে দেড় শতাধিক সংস্কার
নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা পরিস্থিতি পরবর্তী ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধসহ নানা ধরনের বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে চার বছর পার করতে যাচ্ছে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বধীন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ কমিশন। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এর ফলে বিগত চার বছরে দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে।
২০২০ সালের শুরু থেকে শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয় বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের আঘাত। ঠিক ওই সময় টালমাটাল শেয়ারবাজারকে সামাল দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে ১৭ মে বিএসইসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে বিএসইসিতে কাজ যোগদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন্স সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও সাবেক শিল্প সচিব আব্দুল হালিম।
এছাড়া, তৎকালীন আরেক কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন খোন্দকার কামালুজ্জামান। পরে তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন কমিশনার হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধ্যাপক ড. রুমানা ইসলামকে নিয়োগ দেয় সরকার। চলতি বছরের ১৬ মে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের ৪ বছরের চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। এই সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের আইনকানুন ও বিবি-বিধান প্রণয়ন, সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিমার্জনের মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজারের ভিত্তি শক্তিশালী করেছেন।
শিবলী রুবাইয়াতের মেয়াদকালে শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে দেড়শতাধিক পদক্ষেপ নেওয়া করা হয়েছে। শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও সূচক বিবেচনায় তা দৃশ্যমান না হলেও ভবিষ্যতে এর সুফল বিনিয়োগকারীরা পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে কর্মদক্ষতা, নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা ও যোগ্যতার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসকো) পরিচালক (বোর্ড ডিরেক্টর) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে তিনি আইওএসকোর বোর্ড ডিরেক্টর হয়েছেন।
একই সঙ্গে আইওএসকোর এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল কমিটির ভাইস চেয়ার হিসেবে পুনঃনিয়োগ পান তিনি। আগামী ২০২৪-২৬ সাল পর্যন্ত সময়ে উক্ত পদে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি আইওএসকোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন মোলোনি স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। এটি বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
শেয়ারবাজারের উন্নয়নে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন বিএসইসির গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো তুলে ধরা হলো:
২০২০ সালে ১৭ মে শেয়ারবাজার পরিচালনায় নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত লকডাউনে শেয়ারবাজার খোলা রাখার ব্যবস্থা নেয়। একই সঙ্গে শেয়ারবাজারে সুশাসন ফেরাতে আইন সংস্কার ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। দুর্বল ও লোকসানে থাকা কোম্পানিতে স্বচ্ছতা আনতে প্রশাসক বসানো এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পরিবর্তন করা হয়। এছাড়া, শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জিরো টলারেন্স নীতিতে স্থগিত করা হয় অনেক কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালকদের বিও হিসেবে থাকা শেয়ার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে জব্দ করা হয়েছে অনেকের ব্যাংক হিসাব। এর বাইরেও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ন্যূনতম ২ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা হয়।
পাশাপাশি বন্ড মার্কেটকে গতিশীল করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বৈঠক করে কর সুবিধা বাড়ানো, রাষ্ট্রায়ত্তসহ সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের তাগিদ বৃদ্ধি করা, ব্যাংকের নগদ লভ্যাংশ সেপ্টেম্বরের আগে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করা, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) শক্তিশালী করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় করপোরেট গভর্ন্যান্স শক্তিশালী করা, জেড ক্যাটাগরি কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, শেয়ারবাজারের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের উদ্যোগ, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরনের সভা (এজিএম, ইজিএম, পর্ষদ সভা) করার অনুমোদন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়া সহজতর করা, ইউনিয়ন পর্যায়ে ও বিদেশে ব্রোকার হাউজের শাখা হিসেবে ‘ডিজিটাল বুথ’ খোলার অনুমোদন, শেয়ারবাজারকে ডিজিটালাইজড করা ইত্যাদি।
২০২১ সালে শেয়ারবাজারের সুশাসন ফেরাতে বিভিন্ন আইনকানুন সংস্কার ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ, সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ ও এককভাবে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ না থাকা কোম্পানিগুলোর ওপর কঠোরতা আরোপ, দুর্বল ও লোকসানি কোম্পানিতে স্বচ্ছতা আনতে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পরিবর্তন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দুর্বল কোম্পানির পরিচালকদের শেয়ার ও ব্যাংক হিসাব জব্দ, ২০ হাজার কোটি টাকার ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) গঠন, আইপিওতে আসা কোম্পানির শেয়ার আনুপাতিক সমবন্টন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতে একাধিক আইপিও বাতিল করা, ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট (ওটিসি) বাতিল করে এসএমই প্ল্যাটফর্ম চালু করা, অল্টারনেটিভ প্ল্যাটফর্ম চালুর উদ্যোগ, ২০২০ সালে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা, ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ, লভ্যাংশ না দেওয়া ও নামমাত্র লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, তফসিলি ব্যাংকের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ, বুকবিল্ডিংয়ের বিডিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়ানোর উদ্যোগ, বিনিয়োগ বাড়াতে দেশে-বিদেশে ব্রোকার হাউজের শাখা হিসেবে ডিজিটাল বুথ স্থাপন, শেয়ারবাজারের ব্র্যান্ডিং ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন দেশে ‘রোড শো’ এর কার্যক্রম শুরু করা, বিএসইসিসহ স্টক এক্সচেঞ্জকে ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ, স্টক এক্সচেঞ্জে বন্ড-সুকুক-ট্রেজারি বন্ড চালুর উদ্যোগ, ব্রোকারেজ হাউজের সংখ্যা বাড়াতে নতুন ট্রেক ইস্যু করা, বাজার মধ্যস্থতাকারীদের কাজে উৎসাহ বাড়াতে পুরস্কার প্রদানের উদ্যোগ, স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর উদ্যোগ, মার্কেট মেকারের অনুমোদন, পাঠ্যপুস্তকে বিনিয়োগ শিক্ষার অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ এবং উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ ইত্যাদি।
২০২২ সালে বিএসইসির গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগ হলো পুনরায় ফ্লো প্রাইস আরোপ করা। বৈশ্বিক সংকটের কারণে শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক পতন রোধে ওই বছরের ২৮ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে শেয়ারের দাম কমানো ঠেকিয়ে রাখার উদ্যোগ নেয় বিএসইসি। এ ধরনের পদ্ধতি পৃথিবীর অন্য কোনও দেশের শেয়ারবাজারে না থাকলেও আমাদের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বহাল রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর ১৬৭ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা গণনার ক্ষেত্রে শেয়ারের বাজারমূল্যের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করার সুপারিশ, দীর্ঘদিন বিভিন্ন কারণে উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলোকে পুনরায় উৎপাদনে ফেরানো, শেয়ারবাজার থেকে টাকা তুলে লাপাত্তা হওয়া সেগুলোকে ডি লিস্টিং করিয়ে বিনিয়োগকারীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বেশ কিছু আইন-কানুন, বিধিবিধান সংস্কার, কোম্পানিগুলোকে বোনাস লভ্যাংশের বদলে নগদ লভ্যাংশ দিতে অনুপ্রাণিত করা, শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের (ট্রেজারি বন্ড ও ডিবেঞ্চার) লেনদেন চালু, মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে শৃঙ্খলায় ফেরানো, বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন, ইসলামি গ্রিন সুকুকের লেনদেন চালু, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম চালু, জাপানে ভার্চুয়ালি রোড শো আয়োজন করা, মার্কেট ইন্টারমিডিয়ারিদের কাজে উৎসাহ বাড়াতে স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী পুরস্কার- ২০২২ প্রদান, বাজেটে শেয়ারবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ পুনর্বহাল রাখার সুপারিশ, এসএমই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ সহজ করা, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) কমোডিটি এক্সচেঞ্জ গঠনে সহায়তা প্রদান, সিএসইর স্ট্রাটেজিক পার্টনার হিসেবে বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবিজিকে অনুমোদন প্রদান, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেট ফান্ড (ইটিএফ) ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) গঠনে আইন প্রণয়ন, বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য লভ্যাংশ ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) মাধ্যমে ফেরত প্রদান, চেক জমা দিয়েই শেয়ার কেনার সুযোগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারবাজার নিয়ে গুজব বা ভীতি ছড়ানো কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ, দেশের জনগণকে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে মাধ্যমিক পর্যায় থেকে পাঠ্যপুস্তকে বিনিয়োগ শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ, শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ প্রদানে উৎসাহিত করা ও বোনাস শেয়ার অনুমোদনের ক্ষেত্রে নীতিমালা পরিবর্তন, ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখার কারণে স্তিমিত থাকা নতুন বিনিয়োগ শেয়ারবাজারে আনতে নগদ লভ্যাংশ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিওত) অ্যাকাউন্টে আনার উদ্যোগ, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল মেয়াদে প্রথমবারের মতো বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের আইওএসকোর এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনালের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ ইত্যাদি।
২০২৩ সালে শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ইক্যুইটির (শেয়ার) পাশাপাশি নতুন পণ্যভিত্তিক বৈচিত্র্যময় বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলাসহ পলিসিগত বাজারবান্ধব বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন। বিশেষ করে ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর হওয়ার লক্ষ্যে নতুন বৈচিত্র্যময় পণ্য হিসেবে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) চালু করা, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) চালু করা, কমোডিটি ও ডেরিভিটিভস এক্সচেঞ্জ চালু করতে বিধিমালা তৈরি করে গেজেট প্রকাশ, বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করা ইউরোপের দেশগুলোতে রোড শো আয়োজন করা, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে তৃতীয় দফায় ফ্লো প্রাইস আরোপ করা, শেয়ার, ডিবেঞ্চার, করপোরেট বন্ড এবং মিউচুয়াল ফান্ডে ব্যাংকের বিনিয়োগকে শেয়ারবাজার এক্সপোজারের বাইরে রাখার সিদ্ধান্তে সুপারিশে প্রদান, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা এসডিজি অর্জনে সহায়তার লক্ষ্যে শক্তিশাল বন্ড মার্কেট গঠনে ইউএনডিপি এবং ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনসের (আইএফসি) সহায়তার গাইডলাইন তৈরির উদ্যোগ গ্রহণসহ সমঝোতা চুক্তি, নারীদের জন্য ‘অরেঞ্জ বন্ড’ নামক এক বিশেষায়িত বন্ড তৈরির উদ্যোগ, বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ প্রদানের সুবিধা বাড়াতে নীতি সহাতা প্রদান, শেয়ারবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগ সীমা বাড়ানো, ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও অর্থের হিসাব সংরক্ষণের জন্য পৃথক ব্যাক অফিস সফটওয়্যারের পরিবর্তে সমন্বিত ব্যাক অফিস সফটওয়্যার চালুর উদ্যোগ, শেয়ারবাজারে ইসলামিক শরিয়াভিত্তিক বিভিন্ন প্রকার সিকিউরিটিজ আনা এবং ইসলামিক ক্যাপিটাল মার্কেট গঠনের লক্ষ্যে শরীয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের (এসএসি) অনুমোদন, আইওএসকোর এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল কমিটির (এপিআরসি) সভা প্রথমবারের মত বাংলাদেশে আয়োজন করা, ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের নির্দেশনা স্পষ্টীকরণ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শেয়ারবাজারে সতর্কতা বাড়ানোর উদ্যোগ, মুদ্রা বিনিময় হারের ঝুঁকি কমাতে শেয়ারবাজারে ‘ফরেক্স’ চালুর উদ্যোগ, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে পুনরায় কঠোরতা আরোপ, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ নানা বিষয়ে মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে বিএসইসির বৈঠক, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ নিয়ে বিএসইসি-মালয়েশিয়ান রাবার কাউন্সিলের বৈঠক, আইন-পলিসি নির্ধারণ নিয়ে বিএসইসি ও আইএমএফের বৈঠক, ৪ ব্রোকারেজ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের অর্থ প্রদান, শেয়ারবাজারে স্বতন্ত্র পরিচালকের কর্তৃত্ব নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি, বিভিন্ন কোম্পানি একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে বেশ কিছু আইন-কানুন, বিধিবিধান সংস্কার, শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা রক্ষার স্বার্থে বছরজুড়েই কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান; বগুড়া ও সিলেট বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শেয়ারবাজার সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও দক্ষতা বাড়ানো, বছরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে শেয়ারবাজারের সদস্য করা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার পূর্বে উত্তরা ব্যাংকের (তৎকালীন ইস্টার্ন ব্যাংকিং করপোরেশন) ৪০টি শেয়ার তার যোগ্য উত্তরসূরির নিকট হস্তান্তর করা ২০২৩ সালের অন্যতম বড় অর্জন।
২০২৪ সালের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেওয়া বিএসইসি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এছাড়া প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সনদ প্রদান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী পালন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ৫ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি প্রদান, বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করতে সফরতর দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক, স্টক ব্রোকার এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের গ্রাহকের (বিনিয়োগকারী) মার্জিন ঋণের পোর্টফোলিওতে পুনর্মূল্যায়ন জনিত অনাদায়কৃত ক্ষতির বিপরীতে রক্ষিতব্য প্রভিশন সুবিধার মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো, প্রায় ৫ বছর ধরে বন্ধ থাকা পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের লেনদেন শুরুর সিদ্ধান্ত, অডিটর ও অডিট প্রতিষ্ঠান বিএসইসির তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ, ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাদে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের নিয়ে নির্দেশনা জারি; নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ হওয়া, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা এবং সম্পদের চেয়ে দায় বেশি থাকায় কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের নির্দেশনা জারি, ২৬টি কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ ধারণ নিশ্চিত করার পুনরায় নির্দেশ ইত্যাদি।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব বাংলাদেশের শেয়ারবাজারেও পড়েছে। সে ধারাবাহিকতায় গত বছর শেয়ারবাজারের সূচক তেমন বাড়েনি। বছরজুড়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ব্যাংক খাতে অস্থিরতা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসসহ বিভিন্ন ইস্যুতে শেয়ারবাজারে মন্দা ভাব বিরাজ করেছে। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশা অনুযায়ী মুনাফা অর্জন করতে পারেননি। তবে বর্তমান কমিশনের উদ্যোগ এবং সমন্বিত প্রচেষ্টায় শেয়ারবাজার পুনরায় ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আওয়াল/
পাঠকের মতামত:
- মেট্রোরেল বন্ধের হুঁশিয়ারি
- নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নানাকে খুঁজে পেলেন অভিনেত্রী
- আগামী ৩ দিন বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস জানাল আবহাওয়া অফিস
- ২০ ফেব্রুয়ারি নাহিদের পদত্যাগ: ২৪ ফেব্রুয়ারি দল ঘোষণা
- জাহিন স্পিনিংয়ের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা
- ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন
- সূচকের উত্থানে চলছে লেনদেন
- ২ ঘণ্টায় শেয়ারদর বেড়েছে ২২৪ কোম্পানির
- শুরুতেই ৩ কোম্পানির শেয়ারে চমক
- দলে যোগদানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন তথ্য উপদেষ্টা
- ২০২৪-এ খেলাপি ঋণ রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাল!
- সামিট পাওয়ারের ক্যাশডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ফের বাড়ানো হলো স্বর্ণের দাম, ইতিহাসে সর্বোচ্চ
- বাংলাদেশের ইন্টারনেট ভবিষ্যৎ বিপন্ন
- চার জেলার এসপি প্রত্যাহার
- ১৮ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট
- খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সময় জানা গেল
- আইএমএফ-এর চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ে বিলম্ব: অর্থ উপদেষ্টা
- বিএসসি’র দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- রবির লভ্যাংশ ঘোষণা
- দ্বিতীয় কর্মদিবসে ৫ কোম্পানির শেয়ারে ঝলক
- কৃষিবিদ ফিডের বারবার আইন লঙ্ঘন: বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্ধ
- বিএসইসির নতুন মুখপাত্র নিয়োগ
- ১৭ ফেব্রুয়ারী টাকার পরিমানে টপ ২০ শেয়ার
- আগামীকাল লেনদেনে ফিরবে এক কোম্পানি
- ২ কোম্পানির লেনদেন বন্ধ মঙ্গলবার
- ‘আমি কারাগারে থাকলেও বিয়ের অনুষ্ঠান যেন করে ফেলে’
- উপদেষ্টা আমার চাচি নন: ডা. তাসনিম জারা
- ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ
- ‘আমি লাউ, কদু দুটিরই বিপক্ষে’: হাসানুল হক ইনু
- খুলনা প্রিন্টিং এবং এসআলম স্টিলের রমরমা লেনদেন
- শেয়ারহোল্ডারদের টাকা নিয়ে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজে বড় অনিয়ম
- লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানাল গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড
- বেক্সিমকো শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে সরকারী উদ্যোগ
- শেয়ারবাজারে মার্জিন ঋণের ফাঁদ: বিপদে লাখো বিনিয়োগকারী, আসছে কঠোর ব্যবস্থা
- গ্রামীণফোনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশাল সুখবর
- রেসের ১০টি মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট ব্লক মার্কেট ট্রানজাকশনে বাধা নেই
- হঠাৎ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের তালিকায় রবির শেয়ার
- শিবলী রুবাইয়াতের জামিন আবেদন নামঞ্জুর
- ৫ খাতের বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ মুনাফা
- আইসিবি তিন হাজার কোটি টাকা পেল ৪ শতাংশ সুদে
- শেখ হাসিনার আরেকটি অডিও ফাঁস
- জাতীয় পার্টির সঙ্গে খেলতে আসলে পিঠে চামড়া থাকবে না
- মূলধন ফিরেছে সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা
- ১৯ খাতে শেয়ার দাম বেড়েছে
- ট্রাম্প জয়ের খবরে ঊর্ধ্বমুখী বিশ্ব শেয়ারবাজার
- এসআইবিএল ব্যাংকে ৫৮৯ জনের চাকরিচ্যুতি
- পদত্যাগ করেছেন দুদক চেয়ারম্যান এবং দুই কমিশনার
- অবশেষে উত্থানে ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজর
- পদ্মা ব্যাংকের ঋণ খেলাপি জুলহাস গ্রেপ্তার