৮৩ শতাংশ হাসপাতালে নেই বর্জ পরিশোধনের ব্যবস্থা

আজ মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয় গবেষণা প্রতিবেদনটি। এটি উপস্থাপন করেন-টিআইবির রিসার্চ ফেলো মো. নেওয়াজুল মওলা। আর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন-টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চিকিৎসা বর্জ্য তৈরি হয় বাংলাদেশে। ক্ষতিকর এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দুর্বল। অপরিশোধিত ও ক্ষতিকর এই চিকিৎসা বর্জ্য বাজারে বিক্রি করছে একটি চক্র। দেশে চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা চলছে। চিকিৎসা বর্জ্য নিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য মিলেছে বলেও জানায় টিআইবি।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, চিকিৎসা বর্জ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, পরিবহণ, পরিশোধন সব ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জনবলের সংকট রয়েছে। যে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেই নিয়োগেও আর্থিক দুর্নীতি ছিল। দুর্নীতিতে স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী যুক্ত। সরকারি হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চিকিৎসা বর্জ্যকর্মী নিয়োগে ২ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়। ৫৫ শতাংশ বর্জ্যকর্মীর নিয়োগ হয় অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ৪৬ শতাংশ, প্রভাবশালীর হস্তক্ষেপে ৪২ শতাংশ ও সরাসরি ঘুসের মাধ্যমে ১৪ শতাংশ বর্জ্যকর্মীর নিয়োগ হয়।
দেশের ৪৫টি জেলার ১৮১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং ৩৮সিটি করপোরেশন-পৌরসভা, ১২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ৯৩ জন বর্জ্যকর্মীর দেওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয় গবেষণা প্রতিবেদনটি। এছাড়া চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যুক্ত বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। গবেষণার তথ্য সংগ্রহের কাজটি হয়েছে ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত।
বর্জ্য সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট রঙের পাত্রের ঘাটতি সম্পর্কে টিআইবি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা, ২০০৮ অনুযায়ী বর্জ্য সংরক্ষণের জন্য ৬টি নির্দিষ্ট রঙের পাত্র রাখার নির্দেশনা থাকলেও জরিপকৃত হাসপাতালের ৬ শতাংশে তা নেই। হাসপাতালের অভ্যন্তরে যত্রতত্র বর্জ্য ফেলা হয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে বর্জ্যকর্মী সব ধরনের বর্জ্য একত্রে বালতি-গামলায় সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেন।
গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হাসপাতালের চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬৬ শতাংশ বর্জ্য মজুতকরণের জন্য নির্দিষ্ট কক্ষ নেই। ৪৯ শতাংশে অটোক্লেভ যন্ত্র নেই। ফলে এসব হাসপাতালে চিকিৎসা উপকরণ পরিশোধন না করেই পুনর্ব্যবহার করা হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ অনুযায়ী ‘লাল’ শ্রেণিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে হাসপাতালে তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থাকা বাধ্যতামূলক হলেও ৮৩ শতাংশ হাসপাতালে তা নেই। আর যেসব হাসপাতালে (১৭ শতাংশ) ইটিপি আছে, তাদের ১৬ শতাংশ হাসপাতালে এই ব্যবস্থা সচল নেই। জরিপকৃত সব সিটি করপোরেশন এবং ৭৭ শতাংশ পৌরসভায় চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই। মাত্র ২৩ শতাংশ পৌরসভা তাদের ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’র একটি উপখাত হিসাবে চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বার্ষিক ১ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ করে থাকে। যদিও পৌরসভার শ্রেণিভেদে চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বার্ষিক ১০ থেকে ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন হয়। বাজেট ঘাটতির কারণে হাসপাতালগুলোর আধুনিক প্রযুক্তি এবং ইনসিনেরেটর ক্রয় করার সামর্থ্য নেই। ক্ষেত্রবিশেষে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের অজুহাতে হাসপাতালে আধুনিক প্রযুক্তি এবং ইনসিনেরেটর, অটোক্লেভসহ বর্জ্য শোধন ও বিনষ্টকারী যন্ত্র ব্যবহার করা হয় না।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ চিকিৎসাবর্জ্য পুনর্ব্যবহারের কাজে জড়িত হয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। একইভাবে হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ পুনঃচক্রায়নযোগ্য চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, ব্লেড, ছুরি, কাঁচি, রক্তের ব্যাগ ও নল, ধাতব উপকরণ) নষ্ট বা ধ্বংস না করে সংক্রামিত অবস্থাতেই ভাঙারি দোকানে এবং রিসাইক্লিং কারখানাগুলোতে বিক্রি করে দেন। সংক্রমিত অবস্থায় এসব বর্জ্য পরিবহণ করার ফলে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মী ও রিসাইক্লিং কারখানার কর্মীদের বিভিন্ন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়া এবং পরিবেশ দূষণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। একটি জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কেজি প্লাস্টিক চিকিৎসা বর্জ্য অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পাশাপাশি টিআইবি চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিতে ৯টি সুপারিশ করেছেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়, তদারকি ও তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করতে ‘কর্তৃপক্ষ’ গঠন করা এবং জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বয় কমিটি গঠন করা, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনের দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা, ২০০৮ সংশোধন করা, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর সংশ্লিষ্ট ধারায় সুস্পষ্টভাবে চিকিৎসা বর্জ্যকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন বা পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যকর কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা।
এছাড়া চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সক্ষমতা ও কার্যকরতা বৃদ্ধির জন্য এই ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা, প্রত্যেক সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ও এলাকভিত্তিক কেন্দ্রীয় ইনসিনারেটর স্থাপন, দক্ষ জনবল দিয়ে চিকিৎসা বর্জ্য পরিশোধন ও অপসারণ, চিকিৎসা বর্জ্যরে ঝুঁকি সম্পর্কে হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসাবর্জ্যকর্মী এবং জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, সিটি করপোরেশন বা পৌরসভায় চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদাভাবে জনবল নিয়োগ এবং যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া ও চিকিৎসা বর্জ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা প্রদান করার সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার জন্য অপরিহার্য বিষয় হচ্ছে চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এই খাতের সুরুক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তায় নিশ্চিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমাদের গবেষণা প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।
মোর্শেদ/
পাঠকের মতামত:
- মেট্রোরেল বন্ধের হুঁশিয়ারি
- নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নানাকে খুঁজে পেলেন অভিনেত্রী
- আগামী ৩ দিন বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস জানাল আবহাওয়া অফিস
- ২০ ফেব্রুয়ারি নাহিদের পদত্যাগ: ২৪ ফেব্রুয়ারি দল ঘোষণা
- জাহিন স্পিনিংয়ের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা
- ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন
- সূচকের উত্থানে চলছে লেনদেন
- ২ ঘণ্টায় শেয়ারদর বেড়েছে ২২৪ কোম্পানির
- শুরুতেই ৩ কোম্পানির শেয়ারে চমক
- দলে যোগদানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন তথ্য উপদেষ্টা
- ২০২৪-এ খেলাপি ঋণ রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাল!
- সামিট পাওয়ারের ক্যাশডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ফের বাড়ানো হলো স্বর্ণের দাম, ইতিহাসে সর্বোচ্চ
- বাংলাদেশের ইন্টারনেট ভবিষ্যৎ বিপন্ন
- চার জেলার এসপি প্রত্যাহার
- ১৮ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট
- খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সময় জানা গেল
- আইএমএফ-এর চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ে বিলম্ব: অর্থ উপদেষ্টা
- বিএসসি’র দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- রবির লভ্যাংশ ঘোষণা
- দ্বিতীয় কর্মদিবসে ৫ কোম্পানির শেয়ারে ঝলক
- কৃষিবিদ ফিডের বারবার আইন লঙ্ঘন: বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্ধ
- বিএসইসির নতুন মুখপাত্র নিয়োগ
- ১৭ ফেব্রুয়ারী টাকার পরিমানে টপ ২০ শেয়ার
- আগামীকাল লেনদেনে ফিরবে এক কোম্পানি
- ২ কোম্পানির লেনদেন বন্ধ মঙ্গলবার
- ‘আমি কারাগারে থাকলেও বিয়ের অনুষ্ঠান যেন করে ফেলে’
- উপদেষ্টা আমার চাচি নন: ডা. তাসনিম জারা
- ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ
- ‘আমি লাউ, কদু দুটিরই বিপক্ষে’: হাসানুল হক ইনু
- খুলনা প্রিন্টিং এবং এসআলম স্টিলের রমরমা লেনদেন
- শেয়ারহোল্ডারদের টাকা নিয়ে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজে বড় অনিয়ম
- লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানাল গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড
- বেক্সিমকো শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে সরকারী উদ্যোগ
- শেয়ারবাজারে মার্জিন ঋণের ফাঁদ: বিপদে লাখো বিনিয়োগকারী, আসছে কঠোর ব্যবস্থা
- গ্রামীণফোনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশাল সুখবর
- রেসের ১০টি মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট ব্লক মার্কেট ট্রানজাকশনে বাধা নেই
- হঠাৎ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের তালিকায় রবির শেয়ার
- শিবলী রুবাইয়াতের জামিন আবেদন নামঞ্জুর
- ৫ খাতের বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ মুনাফা
- আইসিবি তিন হাজার কোটি টাকা পেল ৪ শতাংশ সুদে
- শেখ হাসিনার আরেকটি অডিও ফাঁস
- জাতীয় পার্টির সঙ্গে খেলতে আসলে পিঠে চামড়া থাকবে না
- মূলধন ফিরেছে সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা
- ১৯ খাতে শেয়ার দাম বেড়েছে
- ট্রাম্প জয়ের খবরে ঊর্ধ্বমুখী বিশ্ব শেয়ারবাজার
- এসআইবিএল ব্যাংকে ৫৮৯ জনের চাকরিচ্যুতি
- পদত্যাগ করেছেন দুদক চেয়ারম্যান এবং দুই কমিশনার
- অবশেষে উত্থানে ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজর
- পদ্মা ব্যাংকের ঋণ খেলাপি জুলহাস গ্রেপ্তার