ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

‘রমজানে খাদ্য মজুতে কোনো ঘাটতি হবে না’

২০২২ ডিসেম্বর ১৩ ২১:২৬:৪৯
‘রমজানে খাদ্য মজুতে কোনো ঘাটতি হবে না’

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সচিব কমিটির বৈঠক শেষে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, দেশের খাদ্য পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে। দেশে বর্তমানে ১৬ লাখ টনেরও বেশি খাদ্য মজুত রয়েছে। আমরা একটা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে রয়েছি। আর ওএমএসসহ যেসব খাদ্য সহায়তা করা হচ্ছে, সেগুলোও চলবে। অর্থাৎ কম দামে খাদ্য সহায়তাগুলো বন্ধ হচ্ছে না।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগামী রমজান পর্যন্ত আমাদের কোনো খাদ্য সংকট হবে না। বিশেষত কৃষি সচিব এ নিয়ে গত ছয় মাস ধরে সমন্বয় করছেন। তাতে এই বোরো মৌসুম শেষ হয়ে গেলে আগামী মে মাস পর্যন্ত খাদ্য উদ্বৃদ্ধ থাকবে।

এছাড়া বর্তমানে যে খাদ্য মজুত আছে, সেটা ছাড়াও এবার আমনের ফলনও ভালো হয়েছে। খরা দীর্ঘায়িত হওয়ায় সুবিধা হচ্ছে যে, নিম্নাঞ্চলেও আমন চাষ করা গেছে। সূর্যের আলো বেশি থাকায় সালোকসংশ্লেষণ ভালো থাকায় ফসল ভালো হয়েছে। ধানে খুব একটা চিটা হয়নি।

গম সংকট বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিবেশ গত কারণে আমাদেশে গম উৎপাদন কম হয়। গম শীতপ্রধান দেশের ফসল। এটা হলো সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ১২টি দেশের। এসব দেশে যে গম উৎপাদন হয়, তা রিপ্লেস করা কঠিন। আমরা প্রায় ৫৮-৫৯ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন করেছি। এটার খাদ্যমূল্য আরও বেশি। আর গম আমদানিরও চেষ্টা চলছে। খাদ্যসচিব গম আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সচিবদের যে বৈঠক হয় আজ তারই একটি ফলোআপ বৈঠক হয়েছে। আমাদের সব সচিবদের কাছ থেকে ব্যয় সংকোচন- যেমন এন্টারটেইনমেন্ট, বিদ্যুৎ বা পেট্রলে ব্যয় কতটা কমল, তার একটি পর্যালোচনা নিয়েছি।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত জুন মাস থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুতে প্রায় ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় কমানো সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তো প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি কমে এসেছে। আর জ্বালানি খাতেও ৪০ শতাংশ ব্যয় কমেছে। বৈঠকে তা তুলে ধরা হয়েছে। সবাই তা চর্চা করছেন। এটিই আমাদের কাছে সবচেয়ে আদর্শ বলে মনে হয়েছে।

সচিব আরো বলেন, বিশ্বজুড়ে যে আর্থিক মন্দা চলছে এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে প্রকল্পের এ, বি ক্যাটাগরি করে দেওয়া হয়েছে। সেসব ক্যাটাগরি কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বৈদেশিক ঋণকে সঠিকভাবে কাজে লাগতে অনুরোধ করা হয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের জন্য ভালো হবে।

এ ছাড়াও যখন আমরা বৈদেশিক ঋণ নিই, তখন একটি বার্ষিক প্রজেকশন (প্রক্ষেপণ) দেখাতে হয়। যেমন- এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আমাদের ৪০০ মিলিয়ন ডলার লাগবে। এখন আমরা যখন ৪০০ মিলিয়নের রিকুইজেশন দিয়ে দিই, তা খরচ করতে না পারলেও আমাদের ব্যবস্থাপনা খরচ কম আসে না। আমরা যদি ২০০ মিলিয়ন ডলারও খরচ করি, তখন ব্যবস্থাপনা খরচ দিতে হয় ৪০০ মিলিয়নেরই। যে কারণে এ দিকটিতে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখনো চলতি অর্থবছরের ছয় মাস হয়নি, কাজেই আগামী ছয় মাসের মধ্যে যেন এটা বাস্তবায়ন করতে পারি। এতে দুটো কাজ হবে। প্রথমত, বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের একটা সমাধান হবে। খরচও বেশি হবে না। সর্বোচ্চ সাশ্রয় কোন মন্ত্রণালয় করেছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বেশি সাশ্রয় করেছে; যা ৬০ শতাংশ। এরপর বিনোদন।

শেখ হাসিনার সাথে সচিবদের বৈঠকে ২৪ দফা নির্দেশনায় যে কোনো সংকটের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সেই সংকটটা কী ধরনের- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোনো কারণে এক-দুই মাস সাপ্লাই চেইন বন্ধ হয়ে গেলে, সেটার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়।

মোর্শেদ/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর