ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

অলটেক্সের শেয়ার কারসাজিতে জসিম সিন্ডিকেটকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা

২০২২ ডিসেম্বর ১২ ১৮:০৮:২৬
অলটেক্সের শেয়ার কারসাজিতে জসিম সিন্ডিকেটকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা

অভিযুক্তরা ইমিনেন্ট সিকিউরিটিজ ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডিং ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে ১৯টি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারদর কারসাজি করে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাদের উপর এ জরিমানা আরোপ করেছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত মো. জসিম উদ্দিন চান্দ্রা শিক্ষিত বেকার যুব বহূমুখী সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান ও শিক্ষিত বেকার কেন্দ্রীয় সঞ্চয় ঋণদান সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে ১ কোটি ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮৯ টাকা রিয়েলাইজড গেইন এবং ২৭ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৩ টাকা আনরিয়েলাইজড গেইন করেছেন।

অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনকে এর আগে চলতি বছরের অক্টোবরে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে মো. জসিম উদ্দিনকে এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। তার আগে সেপ্টেম্বরে প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার যোগসাজশের মাধ্যমে কারসাজির অভিযোগে তাকে ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা চলতি বছরের গত ১১ সেপ্টেম্বর পত্রের মাধ্যমে উল্লিখিত ব্যর্থতা তথা বিধি লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করেছে তা কমিশনের নিকট গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি। জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীদেরে উক্ত আইন লঙ্ঘন ইচ্ছাকৃত। যেহেতু, সিকিউরিটিজ সংক্রান্ত উল্লিখিত আইন ও তার অধীন জারিকৃত বিধি-বিধান পরিপালনে জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীদের উক্তরূপ ব্যর্থতা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২২ এর অধীন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যেহেতু, কমিশনের বিবেচনায়, সিকিউরিটিজ আইন পরিপালনে উল্লিখিত ব্যর্থতার জন্য, তথা পুঁজিবাজারের উন্নয়নের পাশাপাশি বাজারের শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা রক্ষার স্বার্থে জসীম উদ্দিন ও তার সহযোগীদেরকে জরিমানা করা প্রয়োজন ও সমীচীন। ‘অতএব, কমিশন উল্লিখিত যাবতীয় বিষয় বিবেচনাপূর্বক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(৫)(২) লঙ্ঘন করা জন্য সেকশন ২২’ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জসীম উদ্দিন ও তার সহযোগীদের ওপর ৫০ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হলো। অত্র আদেশের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে বিএসইসির অনুকূলে ইস্যুকৃত ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে কমিশনে জমা করতে হবে।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গেছে, জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা ২০২১ সালের ২৮ জুন থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ আড়াই মাসে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কারসাজি করে দাম বাড়ায়। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারের দাম ১০.১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩.৪০ টাকায় নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৩.৩০ টাকা বা ১৩১.৬৮ শতাংশ।

কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজিতে যে ১৯টি বিও হিসাব ব্যবহার করা হয়েছে, তা পরিচালনাকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম হলো-জে. এস এন্টারপ্রাইস, শিক্ষিত বেকার সঞ্চয় ও ঋনদান, বাগরা শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, চাঁদপুর শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, ওয়্যারলেস বাজার শিক্ষিত বেকার, চান্দ্রা শিক্ষিত বেকার যুব বহুমুখী সমবায় সমিতি, শিক্ষিত বেকার কেন্দ্রীয় সঞ্চয়, মো. জসিম উদ্দিন, ফরিদগঞ্জ শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, এসবিসিএল আমাদের পণ্য আমাদের বাজার, গৃদকালিন্দিয়া শিক্ষিত বেকার, পাটোয়ারি বাজার শিক্ষিত বেকার, শাহরাস্তি শিক্ষিত বেকার, মো. মাসুদুর রহমান শেখ, মো. মাসুদুর রহমান শেখ, মতলব শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, রূপসা শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়, এসবিসিএল হাউজিং ও তোরাম নিশির্থ শিক্ষিত বেকার সঞ্চয়।

কারসাজি চক্রটি ২০২১ সালের ২৮ জুন থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে গড় ১৬.২৪ টাকা দরে ৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকায় ৩৯ লাখ ৬১ হাজার ৭৬০টি শেয়ার কিনে। একই সময়ে তারা গড় ১৬.৫০ টাকা করে ৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকায় ৪১ লাখ ৭১ হাজার শেয়ার বিক্রি করে। বিক্রি করা শেয়ারগুলো ক্রয়ে গড় ব্যয় হয়েছিল ১৩.৯৭ টাকা। যাদের হাতে এরপরও আরও ৭ লাখ ৮৫ হাজার শেয়ার ছিল। ওই বিক্রি থেকে জসিম চক্র শেয়ারপ্রতি ২.৫৩ টাকা করে মোট ১ কোটি ৫ লাখ টাকার রিয়েলাইজড গেইন করে। এছাড়া শেয়ারপ্রতি ৩.৪৭ টাকা করে আনরিয়েলাইজড গেইন দাঁড়ায় ২৭ লাখ টাকা।

এএসএম/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর