ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

বিএনপির দেড় লাখ নেতাকর্মী এখন ঢাকায়

২০২২ ডিসেম্বর ০৭ ০৯:৩১:১৮
বিএনপির দেড় লাখ নেতাকর্মী এখন ঢাকায়

দীর্ঘদিন ধরে এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিএনপির সর্বসস্তরের নেতা-কর্মীরা। সম্ভাব্য পরিবহন ধর্মঘটের আশঙ্কায় দুই দিন থেকে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এক থেকে দেড় লাখ রাজনৈতিক নেতা ঢাকায় প্রবেশ করেছেন

অনেক নেতার বাসা-বাড়ি ও হোটেলে পুলিশের তল্লাশির কারণে তারা নয়াপল্টন এলাকা থেকে দূরে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের বাড়িতে নিরাপদে অবস্থান করছেন। এদিকে নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপির কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ ও মধ্য সারির নেতারা দলীয় কার্যালয়ের আশপাশে অবস্থান করছেন। সমাবেশের অনুমতি না পেলেও নয়া পল্টন বা ফকিরাপুল ঘিরে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে দলটি।

গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির নেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, দেশের মানুষ আজ অনেক খুশি। বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে একটি মহল হামলা চালাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ ১০ই ডিসেম্বর আমাদের সমাবেশ একটি মহাসমাবেশে রূপ নেবে। এরই মধ্যে ঢাকায় আসতে শুরু করেছে অনেকে। পল্টন এলাকায় গেলেই মানুষ দেখা যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনসভা বাস্তবায়ন কমিটির দুই নেতা জানান, ১০ ডিসেম্বরের জনসভা ঘিরে এক থেকে দেড় লাখ নেতা ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন। তারা বিভিন্ন স্থানে নিরাপদে অবস্থান করছেন। কৌশলের অংশ হিসেবে তারা খুব একটা বাইরে বের হবে না।

বিএনপি নেতারা বলছেন, পরিবহন ধর্মঘট, পুলিশের হামলা, ক্ষমতায় থাকাসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ সত্ত্বেও তারা শান্তিপূর্ণভাবে ৯টি বিভাগীয় সমাবেশ করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দলটির সাবেক সংসদ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন নেতা নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেক নেতা-কর্মী। তারপরও তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে। ঢাকার সমাবেশও হবে শান্তিপূর্ণ।

ভেন্যু এখনো ঠিক না হলেও নয়া পল্টন ও আরামবাগ ঘিরে সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। ২৫ অক্টোবর, দলটি ঢাকা বিভাগের ১১টি সাংগঠনিক জেলা ও কেন্দ্রীয় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে প্রথম যৌথ বৈঠক করে। এরপর আরও অনেক বৈঠক হয়। সেসব সভা থেকে দলের ১১টি সাংগঠনিক জেলা ও কেন্দ্রীয় অঙ্গ সংগঠনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় সভায় সর্বোচ্চ সমাবেশের লক্ষ্যে। ঢাকার আশপাশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরীতে ১০ লাখ নেতা-কর্মীর টার্গেট দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রাওয়ানকুল ইসলাম শ্রাবণী বলেন, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় জনসভা সফল করতে ছাত্রদলের ৫০ হাজার নেতাকর্মী প্রস্তুতি নিয়েছেন। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ সফল করতে আমরা জীবন বাজি রেখে প্রস্তুত আছি। তিনি বলেন, বিএনপির দেওয়া কর্মসূচি শুধু বিএনপির কর্মসূচি নয়, এটা এখন বাংলাদেশের মানুষের কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে। আমরা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই- নির্ভয়ে জনসভায় যোগ দিন, সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। জনসমাগমের নিরাপদ আগমন এবং সমাবেশ সফল হওয়ার পর নিরাপদে ফিরে আসা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ছাত্রদল যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, ঢাকা বিভাগের অধীন ১১টি সাংগঠনিক জেলা থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসবেন। তবে ঢাকার বাইরে থেকেও নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। এদিকে, অন্য বিভাগীয় গণসমাবেশগুলোর মতো ঢাকার সমাবেশের আগেও পরিবহন ধর্মঘট দেওয়া হতে পারে—এমনটা ধরে নিয়েই কৌশলের অংশ হিসেবে নেতাকর্মীদের আগেই ঢাকায় আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী গত দুদিনে এক থেকে দেড় লাখ নেতাকর্মী ঢাকায় প্রবেশ করেছেন বলে দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন। এর মধ্যে গত সোমবার রাতে বেশিরভাগ নেতাকর্মী এসেছেন।

এদিকে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় সমাবেশের পরিকল্পনা থাকায় নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা দলীয় কার্যালয় ঘিরে অবস্থান করছেন। আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকলেও যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছেন।

রহমান/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর