ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

ফের আলোচনায় ইসলামী ব্যাংক

২০২২ নভেম্বর ২৯ ১৬:৪১:৩১
ফের আলোচনায় ইসলামী ব্যাংক

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা মুস্তাফা আনোয়ার জানান, তার কাছে থাকা ২ লাখ ২৬ হাজার শেয়ার তিনি বিক্রি করে দেবেন।

ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে তিনি সব শেয়ার বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে ঘোষণার ১০ দিনের মাথায় তিনি জানিয়েছেন, তার সব শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে তাঁর কাছে ইসলামী ব্যাংকের মাত্র ৩৩২টি শেয়ার রয়েছে।

১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকটির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি বড় পরিবর্তন আসে। তখন ইবনে সিনা ট্রাস্টের প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন মুস্তাফা আনোয়ার। তিনি ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজন।

এরপর ২০১৭ সালে দেশের একটি বড় শিল্পগোষ্ঠি ব্যাংকটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। ফলে ব্যাংকটিতে বড় ধরনের ঋণ কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়ম শুরু হয় বলে অভিযোগ উঠতে থাকে। অভিযোগ অনুসারে, কাগুজে কোম্পানি খুলে ও নানা কৌশলে ওই গ্রুপটি ঋণের নামে ব্যাংকটি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছে।

সম্পতি বড় অংকের প্রকৃত সুবিধাভুগী কারা, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ উদ্দেশ্যে মাঠে নেমেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি তদন্ত দল।

এছাড়া ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ডেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সোমবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিদর্শন দল ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করে। তারা ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সাথে বৈঠক করেন। একইদিন সন্ধ্যায় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বাংলাদেশ ব্যাংকে ডেকে পাঠানো হয়।

মালিকানায় আসা ওই শিল্পগোষ্ঠির কর্ণধাররা বিভিন্ন কাগুজে কোম্পানি খুলে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে অর্থ সরিয়ে নেয়। এছাড়া বিদ্যমান বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি আকারের কোম্পানিকে সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেওয়া হয়।

এসব ঋণ অনুমোদনে মানা হয়নি যথাযথ প্রক্রিয়া। রাখা হয়নি পর্যাপ্ত জামানত। ওই শিল্পগোষ্ঠি এসব ঋণের বড় অংশের প্রকৃত সুবিধাভুগী বলে অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি নাবিল গ্রুপ নামে অখ্যাত একটি গ্রুপকে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসে ইসলামী ব্যাংক ও এর কর্তৃত্বে থাকা শিল্পগোষ্ঠিটি। একাধিক সংবাদপত্র বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

গত রোববার (২৭ নভেম্বর) সচিবদের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে এসব ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট দিতে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে নির্দেশ দেয়।

সেদিনই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে সচিবালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে সোমবার বিষয়টি খতিয়ে দেখার কার্যক্রম শুরু করে।

উল্লেখ্য, নাবিল গ্রুপকে দেওয়া ঋণের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে বিতরণকৃত ৫০ কোটি টাকার বড় অংকের ঋণগ্রহীতাদের বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ঋণের কোনো অর্থ পাচার হয়েছে কিনা, হুন্ডি কারবারে ব্যবহার হয়েছে কিনা-তা যাচাই করা হবে।

রহমান/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর