ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

অবরোধে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

২০২৩ নভেম্বর ০২ ০৭:০৯:৩০
অবরোধে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

অবরোধে বিএনপির নেতাকর্মীদের রাজধানীতে পিকেটিং করতে দেখা না গেলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের লাঠি, রড, লগি-বৈঠা-আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া-টহল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে রাজধানীতে কঠোরভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এই সময় ঢাকা থেকে দূর পাল্লার বাস চলেনি, লঞ্চ ছিল বন্ধ। ট্রেন চললেও যাত্রী সংখ্যা ছিল কম। ফলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাইরের জেলাগুলোর যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিল। বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। রাজধানী ঢাকায় অবরোধ সমর্থনে দলটি মিছিল করেছে।

ঢাকায় বিএনপি, সমমনা দলগুলো অবরোধের সমর্থনে মিছিল করেছে; আবার পাল্টা মিছিল করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ সংগঠনগুলো। ঢাকায় গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা ঘটলেও সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সাথে সংঘর্ষে বিএনপির অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে।

পুলিশি গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে ঢাকায় জরুরি কাজে বের হওয়া সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ভোটের অধিকার আদায়ের দাবিতে ডাকা অবরোধ সমর্থন করছেন। তারা নির্বাচনে ভোট দিতে চান। তবে কখন কি ঘটে সে আশঙ্কা সবার মধ্যে রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার রাজধানী ঢাকা ছিল অনেকটা ফাঁকা। রাজধানী থেকে গাবতলি, মহাখালি ও সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি এবং কোনো বাস ঢাকায় প্রবেশও করেনি। র‌্যাব-বিজিবির পাহারায় মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচলের চেষ্টা করা হয়েছে। তাতেও দূরপাল্লার বাস চলেনি। এক জেলা থেকে অরেক জেলাতেও বাস চলেনি। বাস মালিকরা জানান, বাস চালানোর চাপ থাকলেও যাত্রী না থাকায় বাস নামনো সম্ভব হয়নি। সদর ঘাটের লঞ্চ টার্মিনালও ছিল ফাঁকা। সেখান থেকেও কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। বলা যায় সারাদেশ থেকে রাজধানী ঢাকা কার্যত বিছিন্ন ছিল। সব মিলিয়ে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে।

বুধবার দিনভর রাজধানীর রাজপথ ছিল রিকশার দখলে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শান্তি সমাবেশের নামে আওয়ামী লীগ মিছিল-সমাবেশ করছে। এর মধ্যে বিএনপি এবং জামায়াতও বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেছে। এতে তাদের সাথে অনেক স্থানে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। অবরোধে নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ছিল ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন।

অন্যদিকে সরকার দলীয় সমথর্করা বিভিন্ন স্থানে মিছিল করেছে লাঠি হাতে। অনেক স্থানে পুলিশকে সাথে রেখে পাহারা দিতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও মঞ্চ বানিয়ে অবরোধ প্রতিহতের কথা বলছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ তালা দিয়ে রেখেছে। এর আশপাশে নেতাকর্মীদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না। কেউ গেলে তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ ছাড়া গ্রেফতার এড়াতে কেন্দ্রীয় নেতারা সবাই আত্মগোপনে রয়েছেন। এ অবস্থায় থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করছেন। সারাদেশে তৃণমূল নেতারা রয়েছেন সক্রিয়। অবরোধে সাধারণ মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সর্বাত্মক অবরোধ হচ্ছে বলে বিএনপির দাবি।

রাজধানীতে মুগদায় মিডলাইন পরিবহণের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বত্তরা। এ ছাড়া শ্যামলী স্কয়ারের সামনে এবং নতুন বাজার এলাকায় আরও ২টি মাসে আগুন দিয়েছে দুবৃত্তরা। মুগদা বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আল আমিন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।

রামপুরা এলাকায় চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের সময় রিপন নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। বাইতুল মোকাররমে মিছিলে ভাঙচুর ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের এলাকায় পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অবরোধের সমর্থনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ১২ দলীয় জোটের নেতারা সকালে বিজয়নগর পানির ট্যাংকি এলাকায় অবরোধ করেন। অবরোধের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি পালন করে গণফোরাম। মগবাজার এলাকায় সকালে কর্মসূচি পালন করে গণ অধিকার পরিষদ। জামায়াতে ইসলামী রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ ও মিছিল করে।

মার্কেট আওয়ার/মাসুদ

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর