ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

এক আঙিনায় মসজিদ-মন্দির

২০২৩ অক্টোবর ২৪ ১২:৩৭:৪৮
এক আঙিনায় মসজিদ-মন্দির

রোববার (২২ অক্টোবর) দুপুরে লালমনিরহাট জেলা শহরের কালিবাড়ী এলাকায় পাশাপাশি শতবর্ষী মসজিদ-মন্দির প্রাঙ্গণে এ দৃশ্য দেখা যায়। ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশে যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে; এর যথার্থই প্রমাণ পুরান বাজার জামে মসজিদ ও পুরান বাজার কালীবাড়ি দুর্গা মন্দির। এ যেন ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

মসজিদ ও মন্দিরের দেয়াল এক সাথে সংযুক্ত। মসজিদে আজানের সময় থেকে নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক, ঢাকঢোলসহ সব পূজা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। প্রার্থনা শেষে মন্দিরের কার্যক্রম শুরু হয়। উভয় ধর্মের মানুষ বছরের পর বছর ধরে একই প্রাঙ্গণে শৃঙ্খলা বজায় রেখে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে আসছে।

স্থানীয়দের জানান, ১৮৩৬ সালে দুর্গা মন্দির স্থাপিত হওয়ার আগে এখানে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। এ কারণে পুরান বাজার এলাকাটি অনেকের কাছে কালীবাড়ি নামে পরিচিত। মন্দিরের পাশে ১৯০০ সালে একটি প্রার্থনা ঘর নির্মিত হয়েছিল। পরে নামাজ ঘরটি 'পুরান বাজার জামে মসজিদ' নামে পরিচিতি লাভ করে। যথারীতি সকাল-সন্ধ্যা প্রার্থনা ও পূজার আয়োজন করা হয়। শারদীয় দুর্গোৎসব প্রতি বছর এক জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রীতির বন্ধন কখনো ছিন্ন হয়নি।

কালিবাড়ী এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান (৭৫) বলেন, ‘পাশাপাশি মসজিদ-মন্দির হলেও উভয় ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির বন্ধনে থেকে স্ব স্ব ধর্ম পালন করে আসছেন। ধর্ম পালন নিয়ে কখনও কারও বাগবিতণ্ডা হয়নি। নিঃসন্দেহে এটি আমাদের জন্য গর্বের।’

কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি মন্দিরের সভাপতি ও প্রধান পুরোহিত শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘১৮৩৬ সালে দুর্গা মন্দির স্থাপিত হওয়ার আগে এখানে কালী মন্দির স্থাপিত হওয়ায় পুরান বাজার এলাকা অনেকের কাছে কালীবাড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে। এরপর ১৯০০ সালে মন্দিরের পাশে একটি প্রার্থনাগৃহ নির্মাণ করা হয়। নামাজ ঘরটি পরে পুরান বাজার জামে মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। দুই সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বিঘ্নে সম্প্রীতির সাথে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে আসছে। এই সম্প্রীতির বন্ধন জন্ম থেকেই দেখে আসছি।’

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ‘এখানকার মানুষ সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাসী। যার যার ধর্ম সে সে পালন করছেন, কোনও সমস্যা হচ্ছে না কারও।’

সেখানকার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় এবার ৪৭৪টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা চলছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।’

মার্কেট আওয়ার/তারিকুল

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর