ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ২২ শতাংশ

২০২৩ অক্টোবর ০৮ ২৩:৩৭:০৬
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ২২ শতাংশ

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পোশাকের প্রায় এক পঞ্চমাংশের গন্তব্য এই বাজার। বর্তমানে দেশটির বাজারে চীন ও ভিয়েতনামের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ।

চলতি বছরের প্রথম আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ৫ হাজার ৩৪৫ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেন। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২.৭৭ শতাংশ কম। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলসের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানা গেছে।

অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট সময়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৫১৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২১.৭৭ শতাংশ কম।

গত বছরের প্রথম আট মাসে দেশটিতে ৬৬২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ। ওই সময় প্রতি বর্গমিটার কাপড়ে তৈরি পোশাকের দাম ছিল ২.৯৭ ডলার। চলতি বছর প্রথম আট মাসে তা বেড়ে ৩.২৭ ডলার হয়েছে। তার মানে, পোশাকের দাম বেড়েছে ১০.৩৫ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করে চীন। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে চীন ১ হাজার ৯৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তাদের রপ্তানি কমেছে ২৯.৪৭ শতাংশ। গত বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট সময়ে চীন রপ্তানি করে ১ হাজার ৫৫৭ কোটি ডলারের পোশাক।

এদিকে ভিয়েতনাম আলোচ্য সময়ে ৯৬৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪.৫৭ শতাংশ কম। গত বছরের প্রথম আট মাসে ভিয়েতনাম ১ হাজার ২৮০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ভারত ৩২৬ ও ইন্দোনেশিয়া ২৮৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এতে ভারতের রপ্তানি ২১.৫৯ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার ২৬.০৯ শতাংশ কমেছে।

নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। তখন থেকেই দেশটিতে পোশাকের চাহিদা কম। এ কারণে ক্রয়াদেশও কম।’ তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি কমলেও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ায়নি। আগামী বছরের শেষ দিকে দেশটিতে নির্বাচন। তত দিন পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে বলে আমাদের ক্রেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন।’

অবশ্য প্রতিযোগী দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকে এখনো সন্তোষজনক বলেই মনে করেন মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের প্রধান প্রতিযোগী চীন ও ভিয়েতনাম। চীনের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। তার রেশে ভিয়েতনাম সমস্যায় আছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ বর্তমানে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় নিরাপদ। পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনেও ডাবল সেঞ্চুরি (দুই শতাধিক) হয়েছে।

এসব কারণে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো আকৃষ্ট হচ্ছে। সে জন্যই চীন ও ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি পরিস্থিতি ভালো।

মার্কেট আওয়ার/তারিকুল

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর