ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে তারল্য বাড়ালে ঘুরতে পারে শেয়ারবাজার

২০২২ নভেম্বর ২৪ ২১:০৪:২৪
বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে তারল্য বাড়ালে ঘুরতে পারে শেয়ারবাজার

কিন্তু সেই আস্থা বেশি দিন টেকেনি। কিছুদিন পরই ফের পতন ভর করে শেয়ারবাজারে। যেসব কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ভেদ করে ওপরে উঠেছিল, সেগুলো আবার ফ্লোর প্রাইসমূখী হয়ে পড়ে। দিন যতই যেতে থাকে, ফ্লোর প্রাইসে ফেরা কোম্পানির শেয়ার ততোই বাড়তে থাকে। টানা পতনে এখন ফ্লোর প্রাইসে বন্দী বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার।

ফ্লোর প্রাইসে বেশিরভাগ কোম্পানি আটকে থাকায় লেনদেনও তলানিতে এসে ঠেকেছে। এ বিষয়ে মার্কেট আওয়ারের পক্ষ থেকে কথা বলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি শেয়ারবাজারে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর মতামত তুলে ধরেন।

বর্তমান পরিস্থিতি থেকে শেয়ারবাজার কিভাবে ভালো হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে শেয়ারবাজারে তার‌ল্য সংকট বিরাজ করছে। যার কারণে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোরে অবস্থান করছে। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে থাকলেও ক্রেতা মিলছে না।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের এই অবস্থা পরিবর্তন করতে হলে তারল্য বাড়াতে হবে। তারল্য বাড়লে ফ্লোর প্রাইস থেকে শেয়ারগুলো উপরের দিকে মুভ করবে। আর ফ্লোরে আটকা শেয়ার উপরের দিকে মুভ করলেই লেনদেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। আর লেনদেনের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং শেয়ারের গতি ফিরলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থাও তৈরী হবে।

তারল্য বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দিয়ে ড. মিজানুর রহমান বলেন, আইসিবিসহ সরকারি ব্যাংকগুলোর বন্ড ছাড়তে পারে। প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ড ছাড়লে, সেই বন্ড বাংলাদেশ ব্যাংক একটি বিশেষ নির্দেশনার মাধ্যমে ক্রয় করবে। পাশাপাশি বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এই বন্ড ক্রয় করবে। আর এই বন্ড বিক্রির অর্থ প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলে বাজারে তারল্য বৃদ্ধি পাবে।

আর এই তারল্য আইসিবিসহ সরকারি ব্যাংকগুলো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে বাজারকে সাপোর্ট দিলে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে। যেহেতু বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে। আর শেয়ারবাজারের এই খারাপ সময়ে কোনভাবেই ফ্লোর প্রাইস তুলবে না বিএসইসি। তাই ফ্লোর প্রাইসের নিচে নামতে পারবে না কোম্পানির শেয়ারদর। এই সুযোগটা যদি আইসিবিসহ সরকারি ব্যাংকগুলো এবং বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে তাহলে এখান থেকে ভালো মুনাফা করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

এই প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারবাজারে বড় আকারে অংশগ্রহণ করলে বাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়বে। এতে করে শেয়ারবাজারে গতি ফিরবে এবং বাজারের অবস্থানও শক্তিশালী হবে। এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোও লাভবান হবে, বিনিয়োগারীরাও লাভবান হবে। বিপরীতে বাজারও স্বাভাবিক গতিধারায় ফিরে আসবে।

অন্যদিকে, আইসিবিসহ সরকারিব ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণে শেয়ারবাজার উর্ধ্বমূখী হয়ে একটি ভালো অবস্থানে গেলে, বিএসইসির বেঁধে দেওয়া ফ্লোর প্রাইসও তুলে দিতে সক্ষম হবে। আর সে সময়ে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলেও তা শেয়ারবাজারে কোন প্রকার খারাপ প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন শেয়ারবাজার এই বিশ্লেষক।

ড. মিজানুর রহমান আরও বলেন, বর্তমান শেয়ারবাজারের খারাপ পরিস্থিতির কারণে অভিজ্ঞ অনেক বিনিয়োগকারীই শেয়ার বিক্রি করে সাইড লাইনে অবস্থান করছে। শেয়ারবাজারের পরিস্থিতি একটু ভালোর দিকে গেলেই তারা আবারও বাজারে এন্ট্রি নিবে। যদি প্রতিষ্ঠানগুলোর বন্ড ছেড়ে বাজারে তারল্য বৃদ্ধির ঘোষণাও আসে, তাহলেও সুযোগ সন্ধানী বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে এন্ট্রি নিতে শুরু করবে। যা শেয়ারবাজারের গতিই পাল্টে দিতে পারে।

আলম/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর