ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

মিউচুয়াল ফান্ডের সুদে উৎসে কর কর্তনে এনবিআর-এর দ্বিমুখী নীতি

২০২৩ আগস্ট ২৫ ১৪:৫৫:৪৬
মিউচুয়াল ফান্ডের সুদে উৎসে কর কর্তনে এনবিআর-এর দ্বিমুখী নীতি

সেই চিঠির প্রেক্ষিতে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৎসে কর কর্তনের নির্দেশনা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত সম্পদ ব্যবস্থাপকদের মধ্যে নির্দেশনাটি নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁরা বলছেন, নতুন আয়কর আইনে মিউচুয়াল ফান্ডের সব ধরনের আয়কে করমুক্ত রাখা হয়েছে।

কিন্তু এনবিআর এখন বিপরীতে পথে হাঁটছে। তাঁরা বলছেন, এনবিআর-এর ব্যাখ্যায় উৎসে কর কাটা শুরু হলে তাতে মিউচুয়াল ফান্ডের আয় কমবে এবং এই খাতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনাকারী একাধিক সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা বলছেন, ২০১১–২২ সাল পর্যন্ত মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদি আমানতের সুদ বা মুনাফা থেকে কোনো ধরনের উৎসে কর কাটা হয়নি।

২০২২ সালে প্রথম একটি বেসরকারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে মিউচুয়াল ফান্ডের এফডিআরের সুদ থেকে উৎসে কর কর্তনের বিষয়ে এনবিআরের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। তখন এনবিআর জানায়, মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদি আমানতের সুদ থেকে উৎসে কর কর্তন করতে হবে।

ওই ব্যাখ্যার পর থেকে কোনো কোনো ব্যাংক উৎসে কর কাটতে শুরু করে। এরপর বিষয়টি নিয়ে সম্পদ ব্যবস্থাপকেরা এনবিআরের শরণাপন্ন হন। তখন এনবিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয় নতুন আয়কর আইনে এই বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকবে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন স্বীকৃত সত্তা মিউচুয়াল ফান্ড, বিকল্প বিনিয়োগ তহবিল, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের অর্জিত যেকোনো আয় কর অব্যাহতি সুবিধা পাবে।

কিন্তু তারপরও ১ আগস্ট এনবিআর সব মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদি আমানতের সুদ থেকে উৎসে কর কর্তনের নির্দেশনা জারি করে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীর কাছে উৎসে কর কর্তনের নির্দেশনা পাঠায়।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা শেয়ারবাজারের বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগের পাশাপাশি ব্যাংকে মেয়াদি আমানত, ট্রেজারি বিল–বন্ডসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা হয়। মিউচুয়াল ফান্ড গঠিত হয় উদ্যোক্তা ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অর্থে। সেই অর্থের সুরক্ষার জন্য শেয়ারবাজারের পাশাপাশি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন খাতেও এই অর্থ খাটানো হয়। শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন খাতে অর্থ বিনিয়োগ করে যে মুনাফা হয়, তা থেকে বছর বছর বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হয়। তাই বাড়তি করারোপের কারণে ফান্ডের আয় কমলে তাতে মূলত বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই এনবিআর-এর দ্বিমুখী নীতি পরিহার করা উচিত। এনবিআর যেন শেয়ারবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় রেখে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা জারি করে। এতে শেয়ারবাজার ভুল ম্যাসেজ বা বিভ্রান্তিক তথ্য থেকে মুক্ত থাকতে পারবে।

মার্কেট আওয়ার/মামুন

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর