ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

সাড়ে তিন কোটি টাকায় নুরের বাণিজ্যিক স্পেস

২০২৩ আগস্ট ২০ ০৬:৩৫:২৩
সাড়ে তিন কোটি টাকায় নুরের বাণিজ্যিক স্পেস

মো. শাহীন রেজা নামে রূপায়ণ গ্রুপের এক বিক্রয় প্রতিনিধির মধ্যস্থতায় গত ৯ আগস্ট ফ্ল্যাটটি কেনেন তিনি। চুক্তি অনুযায়ী ওইদিনই বুকিং মানি হিসেবে ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। এরপর ১ কোটি টাকা দিতে হবে আগামী ৩০ আগস্ট। অক্টোবর মাসের মধ্যে বাকি টাকা পরিশোধ করে জায়গাটি (ফ্লোর) বুঝে পাবেন ভিপি নুর।

প্রাপ্ত নথিপত্র অনুযায়ী, পল্টনের কালভার্ট রোডের এন/এ নম্বর প্লটে নির্মাণাধীন রূপায়ণ এফপিএবি টাওয়ারের ষষ্ঠ তলায় অবস্থিত ফ্লোরটি বিক্রি করছে রূপায়ণ গ্রুপ। আর এটির ক্রেতা মো. নুরুল হক নুর। প্রতি বর্গফুটের মূল্য ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৮০০ টাকা। সেই হিসাবে ১৬৫৫ বর্গফুটের জায়গাটির (স্পেস) মোট মূল্য ৩ কোটি ২৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এর সঙ্গে কার পার্কিং বাবদ ৮ লাখ এবং ইউটিলিটি বাবদ আড়াই লাখ টাকা ক্রেতাকে পরিশোধ করতে হবে। সব মিলিয়ে জায়গাটি কেনার জন্য নুরুল হক নুরকে খরচ করতে হচ্ছে ৩ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার টাকা। মোট মূল্যের ৪৪ শতাংশ হিসাবে দেড় কোটি টাকা বুকিং মানি হিসেবে দুই কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে বলে চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

রূপায়ণ এফপিএবি টাওয়ারে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির (এফপিএবি) নিজস্ব জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণ করছে রূপায়ণ গ্রুপ। এরই মধ্যে ভবনের বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সব স্পেস এখনো বিক্রি হয়নি। কয়েক জায়গায় টু-লেট সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে।

ভবনের ষষ্ঠ তলায় ৬-বি নম্বর স্পেসের সার্বিক কাজ শেষ হয়েছে। এর প্রবেশপথ কাচের দরজা দিয়ে আটকানো। তবে ভেতরে কোনো আসবাবপত্র নেই। পাশের দুটি ফ্ল্যাটও খালি। সেগুলো এখনো বিক্রি হয়নি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনের নির্মাণ চুক্তি অনুযায়ী কিছু স্পেস বা ফ্ল্যাটের মালিক রূপায়ণ গ্রুপ। আর বাকিগুলোর মালিকানা বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির (এফপিএবি)। ক্রেতাদের অনেকে রূপায়ণের মাধ্যমে স্পেস কিনছেন, আবার কেউ কেউ কিনছেন এফপিএবির কাছ থেকে।

ভবনটির নিরাপত্তারক্ষী শাহীন শেখের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, ষষ্ঠ তলার তিনটি স্পেসের মধ্যে একটি বিক্রি হয়েছে। এটি দেখার জন্য নুরুল হক নুর কয়েকবার এই ভবনে এসেছিলেন।

রূপায়ণ এফপিএবি টাওয়ারে জায়গা কিনেছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে এরই মধ্যে অনেকেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। ভিপি নুর জায়গা কিনে এখান থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করলে ভবনের শান্তি বিনষ্ট হতে পারে। এ নিয়ে তারা চিন্তিত।

বহুতল বাণিজ্যিক ভবনে ভিপি নুরের জায়গা কেনার বিষয়ে জানতে রূপায়ণের বিক্রয় প্রতিনিধি শাহীন রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ফ্ল্যাট কেনাবেচার বিষয়টি আমাদের কাছে গোপনীয় একটি বিষয়। আমরা কোনো গ্রাহকের তথ্য অন্যকে দিতে চাই না।’

এফপিএবি টাওয়ারের ৬-বি নম্বর স্পেসটি বিক্রি হয়ে গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে এটির কথাই কেন জানতে চাওয়া হচ্ছে?

স্পেসটি ভিপি নুরুল হক নুর কিনেছেন কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যদি আপনার কাছে কোনো তথ্য থাকে যে ফ্ল্যাটটি নুরুল হক নুর কিনেছেন, তাহলে সেই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

তবে বাণিজ্যিক স্পেস কেনার বিষয়টি অস্বীকার করেন ভিপি নুরুল হক নুর। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা দলের জন্য একটা অফিস নিতে চেয়েছিলাম। সেজন্য আলাপ-আলোচনা করেছিলাম; কিন্তু পরে সেটি নেওয়া হয়নি। একটা ড্রাফট হয়েছিল, ওই পর্যন্তই। পরে এ বিষয়ে আর কথা হয়নি।’

দলের জন্য অফিস কেনার আলোচনা হলে আপনার একক নামে কেন চুক্তি করা হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা একটা ড্রাফট। এর বেশি কিছু না। আমরা অনেকগুলো অফিসই দেখেছি। কিন্তু এখনো কিছু সিদ্ধান্ত হয়নি।’

মার্কেট আওয়ার/মোর্শেদ

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর