ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

তারল্য প্রবাহ বাড়লে ফ্লোর থেকেই ঘুরে দাঁড়াবে শেয়ারবাজার

২০২২ নভেম্বর ২২ ২২:০২:০৬
তারল্য প্রবাহ বাড়লে ফ্লোর থেকেই ঘুরে দাঁড়াবে শেয়ারবাজার

আজ মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) একাত্তর টিভি আয়োজিত ‘শেয়ার বাজারে সুখবর আসবে কবে? শীর্ষক টক শোতে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ছাইদুর রহমান এবং আমায়া সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক আসলাম সেরনিয়াবাত।

আলোচনা সূত্রপাত করে আসলাম সেরনিয়াবাত বলেন, শেয়ারবাজারে বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ হল আস্থার সংকট। বিভিন্ন কারণে শেয়ারবাজারে আমরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। এই আস্থা আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। আমি মনে আমরা এখন যে অবস্থায় আছি তা হলো সূর্য উঠার সময়। এখন বিনিয়োগ করার সঠিক সময় যাচ্ছে। এখন যদি বিনিয়োগ করা যায়, তাহলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

তিনি বলেন, আমরা পুঁজিবাজারের বিভিন্ন সময় দেখেছি। ১৯৯৬ সালের পতন দেখেছি। ২০১০ সালের পতনও দেখেছি। পাঁচ’শ টাকার শেয়ার ১০ টাকায় নেমে আসতে দেখেছি। আবার পাঁচ’শ টাকার শেয়ার ৫ হাজার টাকায়ও উঠতে দেখেছি। ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে এমন শেয়ার ১ হাজার টাকায় উঠেছে। আবার ১০০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে, এমন শেয়ারও ফ্লোর প্রাইসে পড়ে রয়েছে। তিনি বলেন, উত্থান-পতনের সময়ে আমরা বাজারে ছিলাম। কিন্তু এখন সেই রকম উত্থান-পতনের সম্ভাবনা নেই। এখন শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বে কমিশন অত্যন্ত সচেতন। অনেক কষ্ট করে বাজারটাকে ধরে রেখেছেন। আমাদেরকে আস্থার জায়গাটা শক্ত করতে হবে।

আস্থাতো অবশ্যই দরকার। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা কেন ভয় পাচ্ছেন? কেন তারা আস্থা পাচ্ছেন না-এমন প্রশ্নের জবাবে আসলাম সেরনিয়াবাত বলেন, ভয় পাচ্ছে কারণ বিনিয়োগকারীরা ১৯৯৬ সালে মার খেয়েছে, ২০১০ সালে মার খেয়েছে। সে কারণে তারা এখনো ভয় পাচ্ছে। কিন্তু এখন সে রকম অবস্থা নেই। এখন বাজার অনেক পরিপক্ক। বিনিয়োগকারীরা ভেবেচিন্তে বিনিয়োগ করলে অবশ্যই লাভবান হবেন।

মো. ছাইদুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে নতুন ফান্ড আসলে এই অস্থিরতা থাকবে না। বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফিরে আসবে। আর বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফিরে আসলে শেয়ারবাজার এখান থেকেই ঘুরে দাঁড়াবে। এখন শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি আস্থার সংকট।

এর আগে শেয়ারবাজারে অনেক বেশি লেনদেন হয়েছে, তিন হাজার কোটি টাকারও লেনদেন হয়েছে। সেসব টাকা গেল কোথায়? এমন প্রশ্নের জবাবে ছা্ইদুর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীরা কখন বিনিয়োগ করবে, কখন বিনিয়োগ তুলে নেবে, এটা একান্তই তাদের ব্যাপার। তাদের এ স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।

আস্থার সংকটের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির সংকটের কারণে আমাদের দেশেও তার প্রভাব পড়েছে। ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ এবং ডলারের সংকট শেয়ারবাজারে বড় প্রভাব ফেলেছে। তবে আগে যেমন বিদ্যুঃ সংকট ছিলো এখন তা অনেকটাই কেটেছে।

তিনি আরও বলেন, ডলারের যে সমস্যা তা ইতোমধ্যে কাটতে শুরু করেছে। ডলার প্রাইস স্টাবলিশ হচ্ছে। এর চেয়ে আর বেশি ডলার রেট হওয়ার কোন সম্ভাবনাও নেই। আর এই সমস্যাগুলো কেটে যাওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থার সৃষ্টি হতে শুরু করেছে। আশা করছি খুব দ্রুতই শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

ফ্লোর প্রাইস নিয়ে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, আমি তিন চার মাস আগে থেকেই বলে আসছি ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমার এ কথাটা আমলেই আনছে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা। অথচ ফ্লোর প্রাইস না থাকলে হয়তো মার্কেটে ৩০০ পয়েন্ট কমতো। কিন্ত সূচক কমলেও তা আবার বাড়তো।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজার পড়লেই তো বাড়বে। আপনি যদি বাজারকে পড়তে না দেন, তাহলে শেয়ারবাজার বাড়বে কিভাবে। আমি এই কথাটাই বুঝাতে পারলাম না। শেয়ারবাজারের নিয়ম হচ্ছে পড়বে আবার বাড়বে। বর্তমানে শেয়ারবাজার কয়েকটি গ্যাম্বলিং শেয়ার নিয়ে চলছে। ওই শেয়ারগুলোই শেয়ারবাজার বাড়াচ্ছে, কমাচ্ছে। ফ্লোর প্রাইস তুললে এখন শেয়ারবাজার কিছুটা পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন আপনি বাজারকে পড়তে দিচ্ছেন না। এটা তো শেয়ারবাজারের নিয়ম হতে পারে না। শেয়ারবাজারকে তার নিজের গতিতে চলতে দেওয়া উচিত।

আলম/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর