ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

শেয়ারবাজার নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন: বিএসইসির চেয়ারম্যান

২০২৩ জুলাই ০৮ ১৪:৩৬:৫৯
শেয়ারবাজার নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন: বিএসইসির চেয়ারম্যান

শনিবার (০৮ জুলাই) শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন তাঁর নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ারবাজার নিয়ে একটি মন্তব্য করেছেন।

তিনি সেখানে বলেছেন, সম্প্রতি যেসব শেয়ারের মূল্য বাড়ছে অস্বাভাবিকভাবে সেসব কোম্পানি হয় উৎপাদন বন্ধ, না হয় সবে মাত্র চালু হয়েছে, পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ অনেক বেশি, নীট সম্পদ মূল্য নেগেটিভ, মালিক পক্ষ দুদকের মামলায় পলাতক। এসব কোম্পানি নামকাওয়াস্তে লভ্যাংশ ঘোষণার মাধ্যমে ৬ থেকে ৭ গুণ মূল্য বাড়িয়ে চলছে সকলের সামনে দিয়ে, যেন এদের এসব লীলাখেলা দেখার কেউ নেই।

তিনি আরও লিখেছেন, শোনা যাচ্ছে সিডিবিএল থেকে তথ্য পাচার হচ্ছে কোন কোন রথি-মহারথিরা এইসব শেয়ারে আছেন এবং সব যেন এক হরিলুটের মহাউৎসব।

যেহেতু শেয়ারবাজার খুবই সেনসিটিভ, তাই এই বাজারের জন্য এমন মন্তব্য বিএসইসি কেমনভাবে নিচ্ছে জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, অধ্যাপক আল-আমিন সাহেব শেয়ারবাজার নিয়ে ভালো ভালো কথাও বলে থাকেন। তবে মাঝে মধ্যে নেগেটিভও বলেন। যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের কাছ থেকে আমরা আশা করি না।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসাবে শেয়ারবাজার নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেয়ারবাজারের আরও এক বিশ্লেষক বলেন, অধ্যাপক আল আমিনের বিরুদ্ধে তামহা সিকিউরিটিজের কারসাজির সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির এমডি অভিযোগ করেছেন। তিনি নিজেই কারসাজির সাথে জড়িত। একজন কারসাজি চক্রের সদস্য হয়ে তিনি শেয়ারবাজার নিয়ে যে সকল মন্তব্য করেছেন, তা হাস্যকর ও বেমানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশের পুঁজিবাজারের কয়টি কোম্পানির শেয়ারের মূল্য, সঠিক নিয়মে বিনিয়োগ শিক্ষার আলোকে বৃদ্ধি পাচ্ছে? একদিকে ভাল কোম্পানি বলতে আমরা যেসব কোম্পানিকে বুঝি তার অধিকাংশ (৮০%) ফ্লোর মূল্যে আটকে আছে, আর যেসব শেয়ারের মূল্য বাড়ছে অস্বাভাবিকভাবে সেসব কোম্পানি হয় উৎপাদন বন্ধ,না হয় সবে মাত্র চালু হয়েছে,পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমান অনেক বেশি,নীট সম্পদ মূল্য নেগেটিভ, মালিক পক্ষ দুদকের মামলায় পলাতক। এসব কোম্পানি নামকাওয়াস্তে লভ্যাংশ ঘোষণার মাধ্যমে ৬ থেকে ৭ গুণ মূল্য বাড়িয়ে চলছে সকলের সামনে দিয়ে, যেন এদের এইসব লীলাখেলা দেখার কেউ নেই।

আবার শোনা যাচ্ছে সিডিবিএল থেকে তথ্য পাচার হচ্ছে কোন কোন রথি-মহারথিরা এইসব শেয়ারে আছেন এবং সব যেন এক হরিলুটের মহাউৎসব। ব্রোকারেজ হাউজগুলিতে সমন্বিত হিসাবে শত শত কোটি টাকার ঘাটতি, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য যত নিয়ম কানুন আর রাঘব বোয়ালরা হরিলুট চালিয়ে যাচ্ছে সবার সামনে দিয়ে। আসলে কি আমরা এটাকে পুঁজিবাজার বলতে পারি? এখানে কেন মানুষ বিনিয়োগ করবে? এখানে তারাই বিনিয়োগ করবে যাদের সিডিবিএল তথ্য আছে, যারা মালিক পক্ষের সাথে গেম সেট করবে, যারা নানা গুজব দিয়ে কোমলমতি বিনিয়োগকারীদের মাথায় কাঁঠাল ভেংগে খাওয়ার মত শক্তি রাখবে।

একটু ভাবুন তো যখন বাজারে আর কোন আমজনতা থাকবে না, তখন আপনারা কাদের মাথায় কাঁঠাল ভাংবেন? খেলা চালিয়ে যেতে চাইলেও তো কিছু বি, সি, ডি গ্রেডের প্লেয়ার লাগে। যখন শুধুমাত্র এ গ্রেডের প্লেয়ার থাকবে, খেলা কার সাথে করবেন? বাজারের ৮০% ফান্ড ফ্লোর মুল্যে, আর বাকি ২০% যদি খেলতে গিয়ে ইঞ্জিউরড হয়, খেলা কি আর চলবে? খেলা চালু রাখার জন্য হলেও একবার বিবেকের কাঠগড়ায় দাড়ান, দেখবেন আপনাদেরই খেলতে সুবিধা হবে, সবাইকে মেরে একা একা খেলা যায় না।

আর ব্লক ট্রেড নামের তামাশা কবে বন্ধ হবে? মূল বাজারে একটা শেয়ার ফ্লোর মূল্যে লক্ষ লক্ষ বিক্রয় আদেশ দেয়া আছে, কিন্তু সেই মূল্যে শেয়ার না কিনে, তার চেয়ে বেশি মূল্য দিয়ে কারা শেয়ার কিনছে ব্লক মার্কেট থেকে? এইসব দেখার কি কেউ নাই?

এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, আমি শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। আমার পুরো মন্তব্যটি শেয়ারবাজারের পক্ষে। কিন্তু দুই একটি শব্দ নেগেটিভ থাকলেও তা বর্তমান বাজারে চিত্র এটি।

মার্কেট আওয়ার/মামুন

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর