ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফরেন রিজার্ভ সরাতে হাইকোর্টে রিট

২০২৩ জুন ০১ ০৮:১২:৩১
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফরেন রিজার্ভ সরাতে হাইকোর্টে রিট

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে। অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান বলেন, অদূর ভবিষ্যতে দেশের মানুষকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে রিট আবেদনটি করেছি।

রিট আবেদনে বলা হয়, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর এখন একমাত্র পরাশক্তি। পৃথিবীর যে কোনো দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো ধ্বংস করার ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের আছে। যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে সামরিক শক্তি বা নিষেধাজ্ঞা উভয়ই প্রয়োগ করে।

যুক্তরাষ্ট্র সামরিক শক্তি ব্যবহার করে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, ভিয়েতনামসহ বহু দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে এবং কোটি কোটি মানুষকে হত্যা করেছে।

এছাড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরান, রাশিয়া, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, ইরাক, সুদান, ভেনিজুয়েলাসহ বহু দেশের অর্থনীতি পর্যুদস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে বাংলাদেশ নিয়ে নানামুখী আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র বিস্তার লাভ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেটে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। দেশটি র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থাকলেও আইনের শাসন রক্ষা, মাদক ও মানবপাচার বন্ধে র‌্যাবের অবদান অপরিসীম।

অপরদিকে ২৪ মে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে যা নিষেধাজ্ঞার চেয়ে মারাত্মক। ওই ভিসানীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা ও বিচারকদের টার্গেট করা হয়েছে।

রিট আবেদনে আরও বলা হয়, বৈশ্বিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে বাংলাদেশ দুঃখজনকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেটে পরিণত হলে তাদের ফরেন রিজার্ভ জব্দ করা পুরোনো রীতি। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বহু দেশের ফরেন রিজার্ভ জব্দ করেছে এবং তাদের অর্থনীতি পর্যুদস্ত করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে যে, অদূর ভবিষ্যতে যে কোনো অজুহাতে বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভ যুক্তরাষ্ট্র জব্দ করতে পারে। বাংলাদেশের অধিকাংশ ফরেন রিজার্ভ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে জমা আছে।

তাই ওই রিজার্ভ যদি যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো অজুহাতে জব্দ করে তাহলে দেশের অর্থনীতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য আমদানি করতে পারবে না। এতে দেশের জনগণের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। বহু লোক খাদ্যের অভাবে মারা যাবে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে যেসব দেশের ফরেন রিজার্ভ জব্দ করেছে সেসব দেশের জনগণকে অবর্ণনীয় কষ্ট করতে হয়েছে।

রিটে বলা হয়, বাংলাদেশের অধিকাংশ ফরেন রিজার্ভ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাখার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। জনগণের স্বার্থে অবশ্যই ন্যূনতম যতটুকু রিজার্ভ নিয়মিত ট্র্যানজেকশনের জন্য প্রয়োজন ততটুকু রিজার্ভ যুক্তরাষ্ট্রে রেখে বাদবাকি রিজার্ভ বাংলাদেশের জন্য নিরাপদ দেশ যেমন-চীন, ভারত, রাশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশে স্থানান্তর করতে হবে।

এছাড়া রিজার্ভের উল্লেখযোগ্য অংশ স্বর্ণ, হীরা ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতুতে রূপান্তর করতে হবে। জনগণের স্বার্থে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংককে রিজার্ভ সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মার্কেট আওয়ার/হাবিব

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর