ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে দুর্গ গড়ছে রাশিয়া

বিবিসি বলছে, রাশিয়ার এ তৎপরতা মূলত প্রতিরক্ষামূলক। চারপাশে পরিখা খনন ও বাংকার নির্মাণসহ হামলা ঠেকানোর নানা ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে কয়েকটি শহরকে দুর্গ হিসেবে গড়ে তুলছে তারা।
উপগ্রহ থেকে ধারণ করা শতাধিক ছবিতে উঠে এসেছে এসব চিত্র। ছবিগুলো যাচাই করে দেখা গেছে, গত অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে দেশটির সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলায় নানা প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে রুশ বাহিনী। স্যাটেলাইট ছবি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চার এলাকায় ইউক্রেন হামলা চালাতে পারে—এমন আশঙ্কায় সেখানে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে রাশিয়া। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের পশ্চিম তীর, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের তোকমাক শহর, তোকমাকের পশ্চিমে ই–১৫০ মহাসড়ক ও মারিউপোলের উত্তরে রিভনোপিল গ্রাম। ক্রিমিয়ার পশ্চিম তীর
২০১৪ সাল থেকে ক্রিমিয়া দখল করে রেখেছে রাশিয়া। সমুদ্র সৈকতের জন্য পরিচিত এ উপদ্বীপটি। তবে সৈকতে এখন আর বিনোদনের কোনো চিহ্ন চোখে পড়ে না। বরং দেখা যায়, উপকূলের ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রতিরক্ষামূলক নানা অবকাঠামো, যা তৈরি করেছে রুশ বাহিনী। ম্যাক্সার উপগ্রহ থেকে ধারণ করা একটি ছবিতে দেখা যায়, সৈকত ঘেঁষে সারি বেঁধে রাখা হয়েছে পিরামিড আকৃতির ছোট ছোট কংক্রিটের ব্লক। ট্যাংক ও অন্যান্য সামরিক যানের পথ আটকাতেই এ ব্যবস্থা। এর পেছনেই একটু দূরে খোঁড়া হয়েছে পরিখা। এর লাগোয়া অনেক বাংকার। প্রতিপক্ষের হামলা থেকে সুরক্ষা পেতে এগুলো করা হয়েছে।
কংক্রিটের ওই ব্লকগুলো ‘ড্রাগনস টিথ’ (ড্রাগনের দাঁত) নামে পরিচিত। সৈকতে সেগুলো জমা করে রাখতে দেখা গেছে। রয়েছে কাঠের স্তূপও। এছাড়া মাটি খোঁড়ার কাজে ব্যবহৃত যানও দেখা গেছে। এর অর্থ, গত মার্চে যখন ছবিগুলো স্যাটেলাইট থেকে তোলা হয়েছিল, তখনও সেখানে কাজ চলছিল। আগাম সতর্কতা হিসেবেই রাশিয়া প্রতিরক্ষমূলক এ ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকদের অনেকে। যেমন গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষক লেলা গেস্ট বলেন, স্থলপথে নয়, বরং সমুদ্রপথে ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের হামলা ঠেকাতেই এ প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে এমন নয় যে, শুধু ক্রিমিয়ার পশ্চিম তীরেই এমন প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে রাশিয়া। ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলে থাকা বিভিন্ন এলাকা, যুদ্ধক্ষেত্রের সম্মুখভাগ, এমনকি রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তজুড়েও পরিখা ও বাংকার নির্মাণের মতো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। তোকমাক শহর
তোকমাক ইউক্রেনের ছোট একটি শহর। ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এ শহরটির ওপর দিয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এটি ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলে থাকা অন্য অঞ্চলগুলোর সঙ্গে ক্রিমিয়াকে যুক্ত করেছে। তাই স্বাভাবিকভাবে ইউক্রেন সড়কটি দখলে নিয়ে রুশ বাহিনীকে বিপদে ফেলতে চাইবে। এ শহর ঘিরে আগে থেকেই নানা কর্মযজ্ঞে নেমেছে রাশিয়া। খবর আছে, শহরটিকে একটি সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করতে সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এখানে একটি ঘাঁটি গড়ে তুলতে পারলে, রুশ বাহিনীর রসদ মজুতে কাজে লাগবে। যুদ্ধক্ষেত্রে বাহিনীর কোনো দল পিছু হটলে তারা এই ঘাঁটিতে আশ্রয়ও নিতে পারবে। স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা ছবিতে দেখা গেছে, তোকমাক শহরের উত্তরে পরিখার একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। এ দিক দিয়েই হামলা চালাতে পারে ইউক্রেন বাহিনী। পরিখার পাশাপাশি তোকমাক শহর ঘিরে গোল করে সাজানো হয়েছে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। শহর রক্ষায় রয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে খাদ, যার গভীরতা অন্তত আড়াই মিটার। কোনো ট্যাংক এ খাদ পার হতে গেলে যেন আটকা পড়ে, সেভাবেই এগুলোর নকশা করা। এরপরই রয়েছে কয়েক সারি ড্রাগন টিথ ও পরিখার আরেকটি নেটওয়ার্ক। তবে এগুলোর পাশাপাশি ইউক্রেন বাহিনীর সামনে হয়তো আরও বাধা থাকবে। তোকমাক ঘিরে মাইন পুঁতে রাখার সম্ভাবনা অনেক বেশি বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের গবেষক মার্ক কানসিয়ান। এ গবেষক বলেন, ‘প্রতিটি প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় সাধারণত মাইন থাকে। আর পুরো যুদ্ধেই রুশ বাহিনী ব্যাপক হারে এ অস্ত্রটি ব্যবহার করছে। এখানে (তোকমাক) সেগুলো আরও বেশি পরিমাণে, আর ভালোভাবে লুকিয়ে রাখবে। কারণ, এর মাধ্যমে হামলাকারীদের গতি কমিয়ে দিতে পারলে কামান ও সেনা সদস্যদের মাধ্যমে তাদের ওপর হামলা করা যাবে।’ এদিকে, স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে তোকমাকের কাছে আরও তিনটি শহরে একই ধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দেখা গেছে। ই–১০৫ মহাসড়ক
তোকমাক শহরের পশ্চিমে রয়েছে ই–১০৫ মহাসড়ক। এ মহাসড়কটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেনে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত মেলিতোপোল শহরকে উত্তরের খারকিভ শহরের সঙ্গে যুক্ত করেছে মহাসড়কটি। খারকিভ বর্তমানে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই মহাসড়কটি যাদের থাকবে, তারা সহজেই পুরো অঞ্চলে চলাচল করতে পারবে। ই–১০৫ মহাসড়কের পাশ দিয়ে ৩৫ কিলোমিটার ট্যাংকপ্রতিরোধী খাদ ও পরিখা গড়ে তুলেছে রুশ বাহিনী। এ খাদ ও পরিখার পেছনে মোতায়েন রয়েছে রাশিয়ার ভারী কামানগুলো। ইউক্রেন বাহিনী এ মহাসড়ক ব্যবহার করতে চাইলে কামানগুলো দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো যাবে। কামানের আওতায় রয়েছে কাছের টি-৪০১ নামের আরেকটি সড়কও। মার্ক কানসিয়ান বলেন, ‘সম্প্রতি ইউক্রেনের গড়ে তোলা সাঁজোয়া দলগুলো নিয়ে রাশিয়া শঙ্কিত। এসব দল প্রধান মহাসড়কে উঠতে পারলে দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারবে। এই দলকে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া এবং তাদের গতি কমিয়ে দেয়াই রাশিয়ার প্রতিরক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্য।’ রিভনোপিল গ্রাম
ক্রিমিয়া ও এর পূর্বে ইউক্রেনে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে অবস্থিত মারিউপোল বন্দর কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এ শহরের ৫৫ কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে রিভনোপিল নামের ছোট একটি গ্রাম। স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা ছবিতে এ গ্রামের কাছে একাধিক গোলাকার পরিখা দেখা গেছে। প্রতিটি পরিখার মাঝখানে রয়েছে মাটির স্তূপ। সেগুলো হয়তো কামানগুলোকে রক্ষা করতে অথবা স্থির রাখতে তৈরি করেছে রুশ বাহিনী। আর গোলাকৃতির পরিখাগুলো নিজেদের সুরক্ষায় ব্যবহার করতে পারবেন রুশ সেনারা। এ ছাড়া যেকোনো দিকে হামলা চালাতে কামানগুলো সরানোর কাজেও লাগবে। তবে রাশিয়ার এসব প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কতটা কাজে দেবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেক বিশ্লেষক। কারণ ইউক্রেনীয় বাহিনীও স্যাটেলাইট ও ড্রোন থেকে ধারণ করা ছবি ব্যবহার করে রাশিয়ার এসব প্রস্তুতি চিহ্নিত করতে পারবে এবং সে অনুযায়ী পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারবে। কৌশলগত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিবিলিন লিমিটেডের আলেকজান্ডার লর্ড বলেন, রাশিয়া হয়তো ইউক্রেন বাহিনীকে নির্দিষ্ট কিছু পথে আনতে চাইছে, যে পথগুলোয় ব্যাপক হারে মাইন স্থাপন করা রয়েছে এবং কামান তাক করে রাখা রয়েছে। তবে স্যাটেলাইট ছবিগুলোতে ধরাপড়া রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোই হয়তো সব নয়। এর বাইরে আরও বহু এলাকায় রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মুখে পড়তে পারে ইউক্রেন বাহিনী। আর যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের এগিয়ে রাখতে আরও অনেক পরিকল্পনা থাকতে পারে রাশিয়ার।
হাবিব/
পাঠকের মতামত:
- মেট্রোরেল বন্ধের হুঁশিয়ারি
- নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নানাকে খুঁজে পেলেন অভিনেত্রী
- আগামী ৩ দিন বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস জানাল আবহাওয়া অফিস
- ২০ ফেব্রুয়ারি নাহিদের পদত্যাগ: ২৪ ফেব্রুয়ারি দল ঘোষণা
- জাহিন স্পিনিংয়ের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা
- ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন
- সূচকের উত্থানে চলছে লেনদেন
- ২ ঘণ্টায় শেয়ারদর বেড়েছে ২২৪ কোম্পানির
- শুরুতেই ৩ কোম্পানির শেয়ারে চমক
- দলে যোগদানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন তথ্য উপদেষ্টা
- ২০২৪-এ খেলাপি ঋণ রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাল!
- সামিট পাওয়ারের ক্যাশডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ফের বাড়ানো হলো স্বর্ণের দাম, ইতিহাসে সর্বোচ্চ
- বাংলাদেশের ইন্টারনেট ভবিষ্যৎ বিপন্ন
- চার জেলার এসপি প্রত্যাহার
- ১৮ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট
- খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সময় জানা গেল
- আইএমএফ-এর চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ে বিলম্ব: অর্থ উপদেষ্টা
- বিএসসি’র দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- রবির লভ্যাংশ ঘোষণা
- দ্বিতীয় কর্মদিবসে ৫ কোম্পানির শেয়ারে ঝলক
- কৃষিবিদ ফিডের বারবার আইন লঙ্ঘন: বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্ধ
- বিএসইসির নতুন মুখপাত্র নিয়োগ
- ১৭ ফেব্রুয়ারী টাকার পরিমানে টপ ২০ শেয়ার
- আগামীকাল লেনদেনে ফিরবে এক কোম্পানি
- ২ কোম্পানির লেনদেন বন্ধ মঙ্গলবার
- ‘আমি কারাগারে থাকলেও বিয়ের অনুষ্ঠান যেন করে ফেলে’
- উপদেষ্টা আমার চাচি নন: ডা. তাসনিম জারা
- ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ
- ‘আমি লাউ, কদু দুটিরই বিপক্ষে’: হাসানুল হক ইনু
- খুলনা প্রিন্টিং এবং এসআলম স্টিলের রমরমা লেনদেন
- শেয়ারহোল্ডারদের টাকা নিয়ে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজে বড় অনিয়ম
- লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানাল গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড
- বেক্সিমকো শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে সরকারী উদ্যোগ
- শেয়ারবাজারে মার্জিন ঋণের ফাঁদ: বিপদে লাখো বিনিয়োগকারী, আসছে কঠোর ব্যবস্থা
- গ্রামীণফোনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশাল সুখবর
- রেসের ১০টি মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট ব্লক মার্কেট ট্রানজাকশনে বাধা নেই
- হঠাৎ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের তালিকায় রবির শেয়ার
- শিবলী রুবাইয়াতের জামিন আবেদন নামঞ্জুর
- ৫ খাতের বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ মুনাফা
- আইসিবি তিন হাজার কোটি টাকা পেল ৪ শতাংশ সুদে
- শেখ হাসিনার আরেকটি অডিও ফাঁস
- জাতীয় পার্টির সঙ্গে খেলতে আসলে পিঠে চামড়া থাকবে না
- মূলধন ফিরেছে সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা
- ১৯ খাতে শেয়ার দাম বেড়েছে
- ট্রাম্প জয়ের খবরে ঊর্ধ্বমুখী বিশ্ব শেয়ারবাজার
- এসআইবিএল ব্যাংকে ৫৮৯ জনের চাকরিচ্যুতি
- পদত্যাগ করেছেন দুদক চেয়ারম্যান এবং দুই কমিশনার
- অবশেষে উত্থানে ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজর
- পদ্মা ব্যাংকের ঋণ খেলাপি জুলহাস গ্রেপ্তার