ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

গাজীপুর সিটি নির্বাচন : প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

২০২৩ মে ১৯ ২৩:৩৮:৫০
গাজীপুর সিটি নির্বাচন : প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের প্রধান সমন্বয়কারী ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি ও আমার মা জায়েদা খাতুন যখন কোথাও প্রচারে যাই তখনই নানা কৌশলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে, প্রতিটি মহল্লায় এবং প্রতিটি সেন্টারভিত্তিক আমাদের নেতাকর্মীরা প্রচার করে। সেসব নেতাকের্মীকেও নানাভাবে বাধা দিচ্ছে।

‘আজমত উল্লার নিজস্ব ও দলীয় কিছু লোক দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে একটি নিরপেক্ষ ভোট করা। কিন্তু প্রশাসনের কিছু লোক আছে যারা আমাদের এলাকাভিত্তিক দায়িত্ব পালন করছে তাদের বাসায় গিয়ে এবং মোবাইল ফোনে ডেকে এনে হয়রানি করছে। তাদের যে কোনোভাবে উঠিয়ে এনে তাদের থ্রেট করছে, ভয় দেখানো হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেকের কাছে টাকাও নিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে, কোনোভাবেই টেবিল ঘড়ি মার্কায় যাতে ভোট না দিতে পারে। তারা একজন ব্যক্তিকে মানে আজমত উল্লা খানকে ভোট দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিচ্ছে। এটা কি নির্বাচনের পরিবেশ? নাকি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। একজন মুখোশধারী ভণ্ড লোককে যিনি গাজীপুরে পরীক্ষিত খারাপ। তিনি মুখে বলেন একটা, আর করেন আরেকটা। সেই আজমত উল্লা খানকে ভোট দেওয়ার জন্য বল প্রয়োগ করছে। আমি এটির তীব্র নিন্দা জানাই।’

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের গণসংযোগে হামলার ঘটনা ঘটছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে টঙ্গীর পূর্ব থানার গোপালপুর এলাকায় হামলা হয়। হামলায় গাড়ি ভাঙচুর ও চারজনকে আহত করা হয়েছে।

হামলার ঘটনার পর আজ শুক্রবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর ছয়দানা এলাকায় জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনি এসব অভিযোগ করেন। ওই সময় তার মা উপস্থিত ছিলেন।

জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমি আর আমার ছেলে ভোট চাইতে মানুষের কাছে গিয়েছি। কিন্তু আমাদের ভোট চাইতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। আমার ভোট যদি নিজে চাইতে না পারি, তাহলে মানুষ আমাদের ভোট কীভাবে দেবে?

‘আমার ভোটের জন্য আমাকে এবং আমার ছেলেকে মারার জন্য চেষ্টা করছে। আগামী ২৫ তারিখ মানুষ প্রমাণ করে দেবে আমি এবং আমার ছেলে কি রকম ভোট পাই। সেদিনই প্রমাণ হবে জাহাঙ্গীরের মা সত্য কিনা, জাহাঙ্গীর সত্য কিনা।’

দুপুরে গাজীপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন জাহাঙ্গীর। পরে বিকেলে মা জায়েদা খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে মহানগরীর কুনিয়া, জয়বাংলা রোড, গাছা এলাকায় গণসংযোগ করেন।

গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান শুক্রবার দুপুরে টঙ্গী এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট ও মিথ্যা অভিযোগ করছেন। মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া এটা উনার সন্তানের ব্যাপার। আমি আশা করিনি সন্তানের মতো মিথ্যাচার উনি করবেন। তবে আমি আশা করব, বাস্তব সত্যাটা তুলে ধরতে।

‘ছেলে তো মিথ্যাচার করছে সব সময়ই। আমি আশা করব, বাস্তব সত্য কথাটা যেন তিনি তুলে ধরেন। আমি এ মুহূর্তে ভদ্র মহিলার বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না। সেটা জনগণই বিবেচনা করবে।

এদিন সকালে তিনি টঙ্গীর বাসায় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নির্বাচনী বিষয়ে আলাপ—অলোচনা শেষে টঙ্গী বাসার কাছে মধ্যবাজার জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন। পরে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।

অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম রনি গাজীপুর নগরীর পূবাইলের হায়দরাবাদ, মাজুখান, মারুকা এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। পরে তিনি গাজীপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন এবং নগরীর টঙ্গী এলাকায় গণসংযোগে অংশ নেন।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা বা যে কোনো হটকারিতা কারোরই কাম্য নয়। এটা রাষ্ট্রের জন্য নয়, গণতন্ত্রের জন্যও নয়। রাষ্ট্রের ও নির্বাচন কমিশনের যে আইন আছে অবশ্যই মানতে হবে। মেনে চলতে হবে।

‘আমাদের বার্তা একটাই, আপনারা কোনো রকম হানাহানি, গোলোযোগ এবং কারো সঙ্গে ক্ল্যাশে জড়াবেন না। আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’

মার্কেট আওয়ার/হাবিব

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর