ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

সাংবাদিক, আইনজীবী, বিচারক থেকে রাষ্ট্রপতি

২০২৩ ফেব্রুয়ারি ১৩ ০৯:২৪:১৮
সাংবাদিক, আইনজীবী, বিচারক থেকে রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে আলোচনার বাইরে থাকা সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পুকে নিয়ে ইতোমধ্যেই মানুষের মাঝে ব্যাপক কৌতূহলের জন্ম হয়েছে। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু ছাত্রনেতা, আইনজীবী, সাংবাদিক, বিচারক ও দুদক কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ তিনি ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

রাজনৈতিক জীবনে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সিঁড়ি বেয়ে বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু। দলের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলনেও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এক সময় সাংবাদিকতার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন এই কর্মঠ ব্যক্তি। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্যও পেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন, পরীক্ষিত, সাহসী এবং কঠিন সময়ে সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো প্রজ্ঞা রয়েছে তার।

সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু ১৯৪৯ সালে পাবনা শহরের জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম শরফুদ্দীন আনসারী এবং মা মোসাম্মৎ খায়রুন্নেছা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শেষ করেন তিনি। ছাত্রাবস্থায় ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। স্বাধীন বাংলা ছাত্রপরিষদের পাবনার নেতা হিসেবে ওই জেলায় স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারীদের অন্যতম মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পাবনা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিও নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদ করায় ২০ আগস্ট সামরিক আইনের ৭ ধারায় আটক হয়ে প্রায় তিন বছর কারাগারে কাটান সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু। জেলজীবনের পুরোটা সময়ই তাকে অমানবিকভাবে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা হয়।

সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান দেন। ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। কর্মজীবনে তিনি সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ হিসেবে বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যাপকও ছিলেন তিনি। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োজিত থেকে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া প্রেষণে আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের একজন প্রতিনিধি হিসেবে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আইন সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন সাহাবুদ্দিন। ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তখন সরকারের কাছে এ বিষয়ে ১৩৯৭ পৃষ্ঠার রিপোর্ট পেশ করেছিলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক চেতনাধারী সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পুর রিপোর্টের কারণে তার ওপর আস্থা বাড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। ফলে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেওয়ায় খুশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

মামুন/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর