ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি এক অঙ্কের ঘরে

২০২৩ ফেব্রুয়ারি ০৫ ১৫:০৬:৪১
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি এক অঙ্কের ঘরে

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশ, যা নভেম্বর শেষে ছিল ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর আগে অক্টোবর শেষে ছিল ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বর মাসে যা ছিল ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

মুদ্রানীতিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। সেই হিসাবে ডিসেম্বরে ঋণ প্রবৃদ্ধি মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী

কিছুটা কম হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেসরকারি খাতে প্রকৃত ঋণ প্রবৃদ্ধি আরও কম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতের ঋণে যে প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে তার পুরোটা দেশে বিনিয়োগ বা ব্যবসায় যাচ্ছে না। বরং এ ঋণের একটি অংশ ব্যয় হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্যের বাড়তি দাম মেটাতে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের কারণেও ঋণ প্রবৃদ্ধি বেড়েছে।

পণ্যের দাম বেড়েছে। আবার দেশে বেড়েছে ডলারের দাম। এতে আমদানি বাবদ ব্যয় অনেক বেড়েছে। বেসরকারি খাত যে ঋণ নিয়েছে তার উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় হয়েছে পণ্যের ও ডলারের বাড়তি দাম মেটাতে। ফলে ঋণের প্রকৃত প্রবৃদ্ধি টাকার অঙ্কের তুলনায় কম। মুদ্রা সরবরাহ কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো সুদহার বাড়ানোর পর থেকেই বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমছে। প্রতি মাসে দশমিক ২ থেকে ৫ শতাংশ পয়েন্ট কমলেও ডিসেম্বরে তা অনেক বেশি হারে কমেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ২৬ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা, যা আগের মাস নভেম্বর শেষে ছিল ১৪ লাখ ৬ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করেছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের মুদ্রানীতিতে যা ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ ছিল। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে ঋণ বৃদ্ধির প্রবণতা বিশ্লেষণ করে মুদ্রানীতিতে প্রাক্কলন কিছুটা কমানো হয়। প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাম্প্রতিক কয়েক বছর বিনিয়োগ চাহিদা কম রয়েছে। সাধারণভাবে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে থাকলেও ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো তা নেমে আসে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে। করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর ব্যাপক কমে ২০২০ সালের মে শেষে প্রবৃদ্ধি নামে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে। তবে পরের মাস জুন থেকে একটু করে বাড়তে থাকে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০২২ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ফেব্রুয়ারিতে তা কমে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশে নেমে আসে। এরপর মার্চে আবার বেড়ে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশে দাঁড়ায়। এর পরের মাস এপ্রিলে হয় ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। মে মাসে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। জুনে ঋণ প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। জুলাইয়ে যা ছিল ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। বেসরকারি খাতে ঋণ দেওয়ার পরিমাণ আগস্টে বেড়ে হয়েছিল ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে তা আবার কিছুটা কমে ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ হয়েছে।

এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছিল ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

সোহাগ/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর