ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

আগামীতে অবৈধ চ্যানেলে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বাজেয়াপ্ত হবে

২০২২ নভেম্বর ১৭ ০৭:৩৮:৪৮
আগামীতে অবৈধ চ্যানেলে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বাজেয়াপ্ত হবে

বুধবার (১৬ নভেম্বর) হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাওয়ার সন্দেহে বিএফআইইউ প্রথমবারের মতো ২৩০টি এমএফএস অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে বিএফআইইউ ইউনিট। অ্যাকাউন্ট জব্দ করার পাশাপাশি পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করে হুন্ডি বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ধরনের লেনদেন শনাক্ত করতে বিএফআইইউ সব ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। ২৩০টি অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করা হবে এই শর্তে যে তারা ভবিষ্যতে অবৈধ উপায়ে অর্থ পাঠাবে না। হুন্ডি প্রমাণিত হলে পুরো অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। একই সঙ্গে সুবিধাভোগীর বিরুদ্ধে মামলাসহ বিভিন্ন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিএফআইইউ এর আগে লক্ষাধিক এজেন্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে হুন্ডিতে জড়িত সন্দেহের জন্য সারা দেশে ৫ হাজার ৪১৯টি এমএফএসকে চিহ্নিত করেছিল। এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর এজেন্টশীপ বাতিল করা হয়।

বিএফআইইউর তথ্য অনুযায়ী, একটি চক্র সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ সংগ্রহ করে।

এর পরে এখানে এজেন্টকে অভিবাসী সুবিধাভোগীর বিকাশ, নগদ, রকেট সহ বিভিন্ন এমএফএস নম্বর দেওয়া হয়। তখন এজেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ সুবিধাভোগীর নম্বরে স্থানান্তর করে। এভাবে টাকা এলে বৈদেশিক মুদ্রা বাইরে থাকে। দেশের বাইরে সংগৃহীত অর্থ তখন চড়া দামে কিনে নেয় অর্থ পাচারকারীরা।

গত রোববার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডিদের বৈঠকে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলেন, প্রতি কেজি কমলার এলসি ১২ টাকায় খোলা হয়েছে। আপেল হয়েছে ১৮ টাকা কেজি, খেজুরের এলসি হয়েছে ২০ টাকা। ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে মার্সিডিজ বেঞ্জ আনা হচ্ছে।

তিনি বলেন, কর এড়াতে চালানের অধীনে কম দামে পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। বাকি টাকা দেওয়া হচ্ছে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে। ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করা হচ্ছে।

সংশ্নিষ্টরা জানান, প্রবাসীদের একটি অংশ সুবিধাভোগীর কাছে অর্থ পৌঁছানোর সহজ মাধ্যম হিসেবে হুন্ডিকে বেছে নিচ্ছে। এ কারণে দেশের বাইরে শ্রমিক যাওয়া বাড়লেও রেমিট্যান্স কমছে। অথচ এক বছর আগের তুলনায় এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠিয়ে প্রতি ডলারে ২২ টাকার মতো বেশি পাচ্ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে গড়ে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল। তবে সেপ্টেম্বরে কমে ১৫৪ কোটি ডলারে নামে। অক্টোবরে আরও কমে ১৫৩ কোটি ডলারের নিচে নেমেছে। বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের এ সময়ে প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় চাপ বাড়ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে। যে কারণে সরকার মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। এরমধ্যেঅবৈধ চ্যানেলে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বাজেয়াপ্তকরারও পদক্ষেপ রয়েছে।

এএসএম/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর