ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

আজ নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা

২০২৩ জানুয়ারি ১৫ ০৯:৩৯:৪৫
আজ নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা

বাংলাদেশ ব্যাংক (আর্থিক বছর, ১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় ৩০ জুন) ১টির পরিবর্তে দুটি মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বছরের ১ জুলাই ২০২২-২৩ অর্থবছর শুরু হওয়ার পর ওই মাসের শেষের দিকে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছিল।

বিগত গত কয়েক বছর এই নীতি বছরে একবার প্রকাশ করা হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের আইএমএফের ৪৫০ কোটি (৪.৫ বিলিয়ন) ঋণ পাওয়ার শর্ত হিসেবে এখন তা আগের মতো ছয় মাস পর পর (এক অর্থবছরে দুটি) মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আইএমএফের এই ঋণের বেশ কিছু শর্তের মধ্যে অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল এক অর্থবছরে দুটি মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে হবে।

বেশি কিছু সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের শর্তে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই ঋণের প্রথম কিস্তির টাকা ছাড় করা হবে বলে সরকারকে জানিয়েছিল আইএমএফ।

আজ রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে নতুন এ মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধানসহ ও নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত থাকবেন।

বর্তমান গভর্নরের মেয়াদে এটি তার প্রথম মুদ্রানীতি। বাংলাদেশ ব্যাংক আগে প্রতি ছয় মাসের আগাম মুদ্রানীতি ঘোষণা করলেও গত দুই অর্থবছর তা এক বছরের জন্য করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক নতুন মুদ্রানীতি প্রসঙ্গে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও তারল্য সরবরাহ ঠিক রাখা মুদ্রানীতির মূল কাজ। মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা দেশের অর্থনীতিবিদসহ সব স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন দিক, মুদ্রা সরবরাহ, সংরক্ষিত মুদ্রা ও সুদহার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’

মুদ্রানীতি প্রসঙ্গে অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে আবার বছরে দুইবার মুদ্রানীতির যে ঘোষণা দিয়েছে সেটি অবশ্যই ভালো সিদ্ধান্ত। দুইবার মুদ্রানীতি দিলে কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। তবে মুদ্রানীতির তাৎপর্য কমে গেছে সুদহার নির্দিষ্ট থাকার কারণে। অর্থাৎ ঋণের ৯ শতাংশ সুদ নির্দিষ্ট হওয়ায় মুদ্রানীতিতে নতুন কিছু থাকে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুদহারের নির্ধারিত সীমা যদি উঠিয়ে দেয় তাহলে নীতি সুদহার অর্থাৎ রেপো, রিভার্স রেপো রেট বিভিন্ন সূচক দিয়ে মুদ্রানীতিকে ব্যাখ্যা করা যায়। আর সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ বহাল থাকলে অন্য কিছু কাজ করবে না।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, মূল্যস্ফীতির পারদ ঊর্ধ্বমুখী। অস্থির মুদ্রাবাজারও। ডলার লেনদেন হচ্ছে ১০০ টাকার উপরে। রয়েছে করোনার ধাক্কা। পাশাপাশি বৈশ্বিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে উৎপাদনশীল কর্মকাণ্ডকে যাতে নিরুৎসাহিত না করা হয় সেদিকে মুদ্রানীতির দৃষ্টি থাকবে। এবারের মুদ্রানীতি হবে সতর্কতামূলক। পুরোপুরি সংকোচন বা সম্প্রসারণমূলক নয়।

তারা আরও বলেন, এই মুহূর্তে বাজারে টাকার প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা জরুরি। কারণ ডলারের সংকটের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করায় প্রচুর টাকা চলে এসেছে। ফলে টাকার সরবরাহ কমে তারল্য সংকটে পড়েছে বেশ কিছু ব্যাংক।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ ঋণ বৃদ্ধির সংকুলান রাখা হয়। নভেম্বর পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

হাবিব/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর