ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

নতুন বছরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে: অর্থমন্ত্রী

২০২৩ জানুয়ারি ০১ ২০:৫৬:৪৩
নতুন বছরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে: অর্থমন্ত্রী

রোববার (১ জানুয়ারি) ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিশেষ আলাপচারিতায় এ কথা বলেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন বছরে দ্রব্যমূল্য কমে আসবে, ঊর্ধ্বগতির মূল্যস্ফীতি নিম্নমুখী হবে। রেমিট্যান্স বাড়বে। রপ্তানি আয় ভালো যাবে। আমরা বৈদেশিক উৎস্য থেকে আরও বেশি অর্থ পাব। এগুলো আমাদের রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাবে। তা ছাড়া অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ভালো হবে। সামগ্রিকভাবে আশা করছি, আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।

এর আগে নববর্ষ উপলক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিয়ম করেন। এ সময় অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সারা বিশ্বের জন্য নতুন সংকট। ইউরোপ-আমেরিকার মতো দেশে এখন মন্দার পদধ্বনি। এ কারণে পণ্য রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আয় কিছুটা চাপের মুখে রয়েছে। তবে এ দুই খাতের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বেশকিছু কৌশল ও পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এতে চলমান ডলার সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। অর্থনীতিতে আরও যা সমস্যা রয়েছে, সেগুলোর প্রশমনে গেল বছরই সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।

নতুন বছরে মূল্যস্ফীতির চাপ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যখন দায়িত্ব নিয়েছিল তখন মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১২ দশমিক ৮ শতাংশের মতো। জিনিসপত্রের দাম মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই বর্তমান সরকার সাফল্যের সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। এরপর থেকে গত কয়েক বছর ধরে সেটি ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।

মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমানে যে ঊর্ধ্বগতির মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে, তা মূলত বৈশ্বিক কারণেই হয়েছে। তবে এবারও সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে ইতিমধ্যেই কমতে শুরু করেছে ঊর্ধ্বগতির মূল্যস্ফীতি। এটা আরও কমতির দিকে যাবে। তারপরও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশে মূল্যস্ফীতির যে হার থাকবে সেটি হয়তো বিগত বছরগুলোর চেয়ে কিছুটা বেশিই থাকবে। এর চাপ থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দিতে সরকার আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নতুন বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক নিরাপত্তার আওয়তায় উপকারভোগী বাড়ানো, দারিদ্র্য নিরসন এবং নতুন কর্মসংস্থানমুখী প্রকল্প গ্রহণে জোর দেওয়া হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে আমাদের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমরা সঠিক পথেই হাঁটছিলাম। কিন্তু বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশে দেশে প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী হওয়ার আভাস মিলেছে। আমাদের অর্থনীতিতেও তার প্রভাব পড়েছে। ফলে আমরা বৈশ্বিক বাস্তবতার মুখে সংশোধিত বাজেটে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুনঃনির্ধারণ করেছি। তবে আশা করছি, সংশোধিত বাজেটের চেয়ে প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হবে।

দেশের অর্থনীতিতে সৃষ্ট চলমান সমস্যা ও আগামীর বিশ্বমন্দার শঙ্কা মোকাবিলায় দৃঢ়তার কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ইতোপূর্বে মন্দা মোকাবিলা করার অভিজ্ঞতা বর্তমান সরকারের রয়েছে। ২০০৮ সালে উদ্ভূত অর্থনৈতিক মন্দা সফলভাবে মোকাবিলা করেছে বর্তমান সরকার। এর মহামারি করোনা মোকাবিলা করে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন ছিল যুগান্তকারী পদক্ষেপ। অর্থনীতিতে সৃষ্ট চলমান সমস্যা ও আগামীতে বিশ্বমন্দার শঙ্কাও সরকার সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।

মোর্শেদ/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর