ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

থার্টি ফার্স্ট নাইটে ফানুস না ওড়ানোর নির্দেশ ডিএমপির

২০২২ ডিসেম্বর ৩১ ১০:১৬:৫৪
থার্টি ফার্স্ট নাইটে ফানুস না ওড়ানোর নির্দেশ ডিএমপির

নতুন বছরকে বরণ করে নিতে বাঁধভাঙা উল্লাস যেমন আছে তেমনি কিছু কিছু ঘটনা মানুষের সারাজীবনের কান্না হয়ে দাঁড়ায়। এমন কিছু ঘটনা ঘটে গেল বছর বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে।

জ্বলন্ত ফানুস ও আতশবাজি ফোটানোর কারণে শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকার অন্তত ১০টি জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঢাকার বাইরে এ সংখ্যা প্রায় ১৯০টি। এসব ঘটনায় এদিকে যেমন মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়, অন্যদিকে আগুনের আতঙ্কে ম্লান হয়ে যায় নববর্ষ উদযাপন।

তবে নতুন এই বছরকে কেন্দ্র করে এবার এমন দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নতুন বর্ষবরণ উদযাপনের কয়েক দিন আগে থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছে সংস্থাটি। বিশেষ এই রাতে সব ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য, আতশবাজি, পটকা ফোটানো বা ফানুস উড়ানো বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীটি।

গত বছরে এইদিনে শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকার অন্তত ১০টি জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঢাকার বাইরে এ সংখ্যা প্রায় ১৯০টি। এসব ঘটনায় এদিকে যেমন মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়, অন্যদিকে আগুনের আতঙ্কে ম্লান হয়ে যায় নববর্ষ উদযাপন।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর যেসব এলাকায় ফানুস বিক্রি হয় সেসব জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেছে ডিএমপির বিভিন্ন থানা পুলিশ। স্থানীয় ফানুস বিক্রেতাদের গতবারের অগ্নিদুর্ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ফানুস বিক্রি না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া ডিএমপির প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, নির্দিষ্ট থানাধীন এলাকায় যেন কোনোভাবে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ফানুস বিক্রি ও উড়ানো না হয়।

ডিএমপি জানায়, যদি কেউ ফানুস উড়ায় বা আতশবাজি ফোটায় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক মিন্টু রোডে অবস্থিত মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। সেখানে বিস্তারিত জানানো হবে।

‘তবে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেও অনেকে বাসার ছাদ থেকে লুকিয়ে ফানুস উড়ায়, বাজি ফোটায়। এটা তো আর দেখা যায় না। গত বছর এ কারণে কয়েকটা বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তারপরও আমরা নজর রাখছি।’

‘ইতোমধ্যে ডিএমপির থানাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন কোনোভাবেই কোনো এলাকায় কেউ ফানুস বিক্রি ও উড়াতে না পারে। গতকাল কয়েকটি জায়গায় আমরা অভিযান চালিয়েছি। আজও (শনিবার) অভিযান চলবে‘— বলেন হাফিজ আক্তার।

ফায়ার সার্ভিস ও জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ সূত্রে জানা যায়, গতবার বর্ষবরণ রাতের প্রথম ২০ মিনিটের মধ্যে সারাদেশ থেকে প্রায় ২০০টি অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে। পরবর্তীতে প্রাথমিক তদন্তে ফায়ার সার্ভিস জানতে পারে, এসব অগ্নিকাণ্ডের বেশির ভাগ ঘটে ফানুসের কারণে। কয়েকটি আতশবাজির কারণে।

গত বছরের থার্টি ফার্স্ট রাতে শুধুমাত্র রাজধানীতে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট কাজ করে। আগুনে কেউ হতাহত না হলেও সম্পদের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, ঢাকা শহরের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ফানুস উড়ালে অগ্নিকাণ্ডের বেশ ঝুঁকি থাকে। জ্বলন্ত ফানুসগুলো উড়ে কোথাও না কোথাও পড়ে। বাসাবাড়ির ছাদে নয়তো বস্তি এলাকার ঘরবাড়ির ওপর এগুলো পড়ে। ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, ফানুস উড়ানো যাবে কি না, এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশনা আছে। আমাদের লোকবলও সতর্ক থাকবে যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। ‘তবে, আমরা আহ্বান জানাব সবাই যেন একটু সতর্ক থাকেন, সচেতন থাকেন। ফানুসের কারণে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।’

মোর্শেদ/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর