ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

ভারতে রপ্তানিতে বাংলাদেশের নতুন মাইলফলক

২০২২ ডিসেম্বর ২১ ০৭:৩০:০৫
ভারতে রপ্তানিতে বাংলাদেশের নতুন মাইলফলক

রপ্তানিখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের পর পাশের এই দেশটিতে পণ্য রপ্তানির পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। প্রতি মাসেই বাড়ছে রপ্তানি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ভারতে ১৫ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। আগস্টে তা বেড়ে ২২ কোটি ২৪ লাখ ডলারে ওঠে। সেপ্টেম্বরে তা আরও বেড়ে ২৪ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ১৭ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য। সবশেষ নভেম্বরে ভারতে পণ্য রপ্তানি থেকে ১৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এসেছে।

ইপিবি বলছে, সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ভারতে প্রায় ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি। প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এই পাঁচ মাসে ভারতে ৪৭ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ৩১ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।

ভারতে রপ্তানির বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ ভারতে পণ্য রপ্তানির এই ইতিবাচক ধারা আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে।

তারা বলছেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে নতুন মাত্রা পেয়েছে। তার ফলেই রপ্তানি বাড়ছে। অর্থবছর শেষে এবার ভারতে রপ্তানি ৩ বিলিয়ন (৩০০ কোটি) ডলারের মাইলফলকে গিয়ে পৌঁছতে পারে।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ভারতে ৯৬ কোটি ৬৮ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে; যা আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। এর মধ্যে পাট ও পাটজাতপণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে প্রায় ১০ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে ওভেন পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ২৫ কোটি ৫৫ লাখ ২০ হাজার ডলার। নিট পোশাক থেকে এসেছে প্রায় ২২ কোটি ডলার। এ ছাড়া কটন ও কটন প্রোডাক্টস থেকে ১ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, প্লাস্টিক দ্রব্য থেকে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে ৪ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার আয় হয়েছে।

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলার রপ্তানি হয়েছে, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ৫৫.৬২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছিল ৭২ কোটি ডলার (ওভেন ৪০ কোটি ও নিট ৩১ কোটি ৫৬ লাখ ডলার)।

ভারতে রপ্তানি করা অন্যান্য পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাতপণ্য রপ্তানি থেকে ১৯ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ২০ হাজার ডলার, প্লাস্টিকদ্রব্য থেকে ৩ কোটি ৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং কটন ও কটন প্রোডাক্টস থেকে ৪ কোটি ডলারের মতো আয় হয়েছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে মাত্র তিন অর্থবছরে ভারতে পণ্য রপ্তানি ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারের বেশি হয়েছে, তা-ও সেটা গত তিন বছরে। তার আগের বছরগুলোয় ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে।

এরমধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ভারতে ১২৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেন, যা ছিল এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে এ আয় বেশি ছিল প্রায় ১৭ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারতের বাজারে ১২৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা কমে ১০৯ কোটি ৬১ লাখ ৬০ হাজার ডলারে নেমে আসে।

এএসএম/

ট্যাগ:

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর